Search
Close this search box.

বিশ্বনাথে ফের বন্যায় প্লাবিত ৪ ইউনিয়ন, হার মেনেছে ২০০৪ এর বন্যা

Facebook
Twitter
WhatsApp

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের বিশ্বনাথে বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে ফের বন্যায় প্লাবিত হয়েছে উপজেলা লামাকাজী, খাজাঞ্চী, অংলকারী ও রামপাশা ইউনিয়ন। চার ইউনিয়নের মধ্যে বিশেষ করে লামাকাজী ও খাজাঞ্চী ইউনিয়নের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ পানিবন্ধী হয়ে পড়েছেন।

এবারের বন্যা ২০০৪ সালের বন্যাকেও হার মানিয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে লামাকাজী ও খাজাঞ্চী ইউনিয়নের সকল রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি। প্লাবিত হয়েছে অনেক বাড়িঘর, হাটবাজার, গুচ্ছগ্রাম, ধর্মীয় উপসনালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পানিবন্ধী পরিবারের মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। অনেক ঘরে পানি প্রবেশ করায় খাবার রান্না করা তো দূরের কথা পরিবারের সদস্যদের বিশ্রামের জায়গা নেই। এই ভয়াবহ অবস্থায় মানুষ দুর্বিসহ জীবন যাপন করছেন।

পানিবন্ধী মানুষের আশ্রয়ের জন্য লামাকাজী ইউনিয়নে দিগলী সরকারি প্রাথমিক প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাহতাবপুর সরকারি প্রাথমিক প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মির্জারগাঁও সরকারি প্রাথমিক প্রাথমিক বিদ্যালয়, খাজাঞ্চী ইউনিয়নে বাওনপুর সরকারি প্রাথমিক প্রাথমিক বিদ্যালয়, বন্ধুয়া সরকারি প্রাথমিক প্রাথমিক বিদ্যালয়, নোয়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোমরাগুল সরকারি প্রাথমিক প্রাথমিক বিদ্যালয় ও তালিবপুর সরকারি প্রাথমিক প্রাথমিক বিদ্যালয়, রামপাশা ইউনিয়নে আমতৈল সরকারি প্রাথমিক প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ভাটিপাড়া সরকারি প্রাথমিক প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রস্তুত করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক জরুরী সেবা গ্রহনে এসব আশ্রয় কেন্দ্রে ইতিমধ্যে পানিবন্ধী অনেক মানুষ আশ্রয় নিলেও তা পর্যাপ্ত নয়।

এছাড়া লামাকাজী ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স, আকিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দিঘলী স্বাস্থ্য কেন্দ্র, সৎপুর কামিল মাদ্রাসারা, লামাকাজী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খাজাঞ্চী ইউনিয়নের আলহাজ্ব লজ্জাতুন নেছা দ্বি-পাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয় ও রহিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যা কবলিত অনেক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

লামাকাজী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া বলেন, আমার ইউনিয়নের সকল মানুষ পানিবন্ধী। মানবেতর জীবন যাপন করছেন অনেক মানুষ। ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রেসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছেন অনেক পরিবার। আজকে (বৃহস্পতিবার) সরকারের পক্ষ হতে বন্যার্তদেও মাঝে ৩টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। এই ইউনিয়নকে বন্যা দুর্গত এলাকার ঘোষণা করে পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রদান করতে সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানান চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া।

খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরশ আলী গণি বলেন, আমরা ৫০ বছরের মধ্যে এত বড় বন্যা কখনো দেখিনি। রেল স্টেশনে পানি দেখা দূরের কথা আজ রেল স্টেশনটিও পানিতে তলিয়ে গেছে। আমার ইউনিয়নের প্রাইমারি স্কুলগুলো নিচু তারপরও পানিবন্ধী মানুষকে উচু বিদ্যালয়গুলোতে আশ্রয় নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেল বলেন, ইউনিয়নের বেশীরভাগ মানুষ পানিবন্ধী অবস্থায় রয়েছেন। বৃষ্টি ছাড়াও পানি হেুা হেুা করে বাড়ছে। মানুষকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য বলেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পৌর প্রশাসক নুসরাত জাহান বলেন, আমি বন্যা কবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছি। লামাকাজী ও খাজাঞ্চী ইউনিয়নের অবস্থা ভয়াবহ। পানিবন্ধী মানুষকে ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সসহ প্রত্যেকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বিশ্বনাথনিউজ২৪ডটকম / বিএন২৪