নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের বিশ্বনাথের বিরল রোগ ‘নিউরোফাইব্রোমাটোসিস’-এ আক্রান্ত দিনমজুর জিলু মিয়ার চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে টাকার অভাবে। তার চিকিৎসায় প্রয়োজন প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা। জিলু মিয়া উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের পাকিছিরি গ্রামের সাদেক আলীর ছেলে। তাঁর বিরল এই রোগের চিকিৎসার উদ্যোগ নিয়েছেন প্রবাসীসহ উপজেলার জনপ্রতিনিধি ও কয়েকজন মানবিক মানুষ।
চিকিৎসার অর্থ সংগ্রহের প্রসঙ্গ নিয়ে উদ্যোগ গ্রহনকারীদের পক্ষ হতে বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) দুপুরে খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদ হলরুমে উপজেলার কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তালুকদার মো. গিয়াস উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় জিলু মিয়া তাঁর চিকিৎসায় দেশ বিদেশের সকলের কাছে সাহায্য সহযোগিতা চান।
জিলু মিয়া সাংবাদিকদের জানান, ৯ বছর বয়সে তিনি এ রোগে আক্রান্ত হন। ধীরে ধীরে মুখে ও শরীরের বিভিন্ন অংশে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। এখন এই রোগ তার ডান চোখও ঢেকে ফেলেছে। এছাড়া তার ৪ সন্তানের মধ্যে ১ ছেলে ও এক মেয়ের শরীরেও এই বিরল রোগ বাসা বেঁেধছে।
উদ্যোক্তারা সাংবাদিকদের জানান, দিনমজুর জিলু মিয়ার মাথা ও মুখের ডান দিকের পুরো অংশ জুড়ে অদ্ভুত রকমের ঝুলন্ত মাংসপিন্ডে আর সারা শরীরে ছোট বড় অসংখ্য গোটা রয়েছে। এ অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে দুর্বিষহ মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি। সামান্য ভিটে ছাড়া সহায় সম্বল কিছু না থাকায় অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। বৈবাহিক জীবনে চার সন্তানের জনক তিনি। দিনমজুরের কাজ করে রোজগার করা অর্থ ও সরকার থেকে পাওয়া প্রতিবন্ধি ভাতা দিয়েই টেনেটুনে সংসার চালাতে হয় তাকে।
সভায় জানানো হয়, জিলু মিয়ার চিকিৎসার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ডা. আতাউর রহমান, যুক্তরাজ্য প্রবাসী লোকমান আহমদ, আলমাছ আলী, জুনাব আলীসহ কয়েকজন প্রবাসী। ভারতে জিলু মিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা। ইতিমধ্যে ১ লক্ষ টাকা যৌথ একাউন্টে জমা হয়েছে। আর প্রায় ৪ লক্ষ টাকার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। আরও প্রয়োজন ২০ লক্ষ টাকা। এজন্য প্রবাসীসহ উপজেলার বিত্তবানদের কাছে উদ্যোক্তারা সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। চিকিৎসা সহায়তার জন্য অর্থ জিলু মিয়ার বিকাশ একাউন্ট ‘০১৭২৯৬৮৪৪০৩’ ও ব্যাংক একাউন্ট ২০৫০৭৭৭০২০১১৩৮৫৭৩ (ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং, লামাকাজি) প্রেরণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে খাজাঞ্চী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও চিকিৎসার অন্যতম উদ্যোক্তা তালুকদার মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, জিলু মিয়ার চিকিৎসার জন্যে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত। বিত্তবানদের আর্থিক সহযোগিতাই পারে জিলু মিয়াকে সুস্থ্য স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে।
চিকিৎসার অন্যতম উদ্যোক্তা ও বিশ্বনাথ সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আব্বাস হোসেন ইমরানের পরিচালনায় সভায় আরও চিকিৎসার বিস্তারিত বিষয়ে আরও বক্তব্য রাখেন, আলহাজ্ব তাহির আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আজম আলী, পাকিছিরি গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা ফয়েজ আহমদ তাজির, অলংকারী পৌদনাপুর হাফিজিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আজিজুর রহমান, কাবিলপুর গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা আব্দুল করিম ও পাকিছিরি গ্রামের মো. ফেরদৌস মিয়া।