বিশ্বনাথনিউজ২৪ :: একমাত্র পুত্র রিফাত উদ্দিনকে হারিয়ে দিশেহারা সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা প্রেসক্লাবের সদস্য নূর উদ্দিন ও তার সহধর্মিনী রওশন আরা বেগম। ২০২১ সালের ৬জুলাই সিলেট শহরের মা ও শিশু হাসপাতালে একটি ভূল অপারেশনে ডা. মো. শামছুর রহমান (ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক) এর হাতে মৃত্যু হয় রিফাতের। ঘটনার পর ক্ষুব্ধ সাংবাদিক নূর উদ্দিন আইনের আশ্রয় নিতে চাইলে একটি মহলের তৎপরতায় তিনি বাধ্য হন সামাজিকভাবে বিষয়টি নিস্পত্তি করতে। এরপর বিষয়টি ধামাচাপা দিয়েছে ওই মহল।
পুত্র রিফাতের ১ম মৃত্যুবার্ষিকীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন সাংবাদিক নূর উদ্দিন। স্ট্যাটাসে তিনি প্রকাশ করেন মনের ক্ষোভ। পাঠকদের জন্য সেই স্ট্যাটাসটি হুবহু তোলে ধরা হলো-
‘দুই মেয়ের জন্মের দীর্ঘদিন পর জন্মগ্রহন করে আমার একমাত্র পুত্র রিফাত উদ্দিন। জন্মের ৩ মাস পর গতবছরের এই দিনে সিলেট শহরের মা ও শিশু হাসপাতালে একটি ভূল অপারেশনে ডা. মো. শামছুর রহমান (ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক) এর হাতে মৃত্যু হয় আমার একমাত্র পুত্র রিফাত উদ্দিনের। ডাক্তারের অবজ্ঞায় একটি ভূল অপারেশনে একমাত্র পুত্রকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ি আমি ও আমার স্ত্রী। ছেলের মৃত্যুর একবছর পেরিয়ে গেলেও এই মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে না পেরে এখনও আমার স্ত্রী মানষিকভাবে অসুস্থ রয়েছেন। কারণ তিনি জানেন, আমাদের ঘরে আর কোন দিনও কোন সন্তানের জন্ম হবে না।
ঘটনার পর আমি যখন ওই মানবরূপী ডাক্তারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে যাই। তখনই বিষয়টি নিস্পত্তি করতে সিলেট শহরের মিফতা নামের একজন পরিচিত ব্যক্তি ধরণা দেন আমার সহকর্মীদের কাছে। অভিযুক্ত ডাক্তারকে মুখোমুখি করে বিষয়টি নিস্পত্তি করতে মিফতা সাহেবের মিথ্যা আশ্বাসে আমি সরল বিশ্বাসে এবং খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী ভাই ও আমার সহকর্মীদের অনুরোধে একপর্যায়ে আমি বিষয়টি আপোষে নিস্পত্তি করতে সম্মতি দেই।
কিন্ত দীর্ঘ ১ বছর চলে গেছে আজ পর্যন্ত এব্যাপারে মিফতা সাহেব কোন প্রদক্ষেপ তো নেননি, এমনকি সহকর্মীদের ফোনও রিসিভ করেননি। অবশ্যই প্রথম কয়েক দিন তিনি নানান তালবাহানা করেন। মিফতা সাহেব যদি আন্তরিক হতেন এবং হারানোর বেদনা অনুভব করতেন তাহলে তার মতো মানুষের কাছ থেকে এই ধরণের অমানবিক আচরণ পেতাম না। আসলে যার হারায় সে বুঝে, হারানো কতটুকু কষ্টের। দুনিয়াতে আমি আমার পুত্র হত্যার বিচার না পেলেও ফরিয়াদ জানাই মহান আল্লাহর কাছে। তিনি অবশ্যই এর বিচার করবেন। সকলের কাছে একটাই অনুরোধ আপনারা আমার পুত্রে জন্য এবং আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন আমাদেরকে ধর্য্য ধরার তাউফিক দান করেন। আমিন’