বিশ্বনাথনিউজ২৪ :: সিলেটের বিশ্বনাথে জায়গা নিয়ে পূর্ব বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় ২ জন আহত হওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের উদয়পুর গ্রামের মৃত মকবুল হোসেন চৌধুরীর পুত্র আওলাদ আলম চৌধুরী বাদী হয়ে একই গ্রামের মৃত আব্দুল হাই আজাদের পুত্র আকিকুর রহমান ছুরুক (৫০)’কে প্রধান অভিযুক্ত করে প্রতিপক্ষের ৮জনকে অভিযুক্ত করে এই মামলাটি দায়ের করেন। বিশ্বনাথ থানায় দায়েরকৃত মামলা নং- ৮, তাং- ০৯.০৬.২০২১ইং।
মামলার অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন- আকিকুর রহমান ছুরুক’র পুত্র সুয়েব মিয়া (১৯), মৃত মতিউর রহমান জিতুর পুত্র আতিকুর রহমান ফটিক (২৭), হাফিজুর রহমান লিকছন (২৩), মৃত আব্দুল মিয়ার পুত্র সুমন মিয়া (২৪), শাহ আলম রিঙ্কু (৩০), মৃত কাচা মিয়ার পুত্র জালাল উদ্দিন কয়ছর (২৮) ও মৃত মজলিস মিয়ার পুত্র নূর আলম (২৬)।
মামলার এজাহারে বাদী আওলাদ আলম চৌধুরী উল্লেখ করেন, উদয়পুর গ্রামের পাশাপাশি বাড়ির বাসিন্দা আকিকুর রহমান ছুরুক পক্ষের সাথে দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর যাবৎ জায়না নিয়ে তাদের বিরোধ চলে আসছে। এনিয়ে উভপক্ষের মধ্যে একাধিক মামলা-মোকদ্দমা চলে আসছে। গত ৫ জুন বিকেলে বিরোধপূর্ণ জায়গায় অবস্থিত জাম গাছ থেকে বিবাদী আকিকুর রহমান ছুরুক জাম পাড়তে থাকলে এতে বাদী আওলাদ আলম চৌধুরী আপত্তি জানিয়ে তিনি পারিবাকি প্রয়োজনে স্থানীয় গোলচন্দ বাজারে চলে যান এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তিনি বাজার থেকে ফেরার পথে বাড়ির পাশ্ববর্তি স্থানে পৌছামাত্র অভিযুক্তরা অতর্কিতভাবে তার (আওলাদ আলম চৌধুরী) উপর হামলা চালান। এসময় শোর-চিৎকার শুনে তাকে বাঁচাতে তার ভাই গৌছ আলম চৌধুরী ও কাজী শামছুল ইসলাম এগিয়ে আসলে তাদের উপরও হামলা করেন অভিযুক্তরা। হামলায় গুরুতর আহত হন আওলাদ আলম চৌধুরী (৫৫), তার ভাই গৌছ আলম চৌধুরী (৭০) ও কাজী শামছুল ইসলাম (৬৫)।
বাদী পক্ষের অভিযোগ, অভিযুক্তরা প্রভাবশালী দাঙ্গাবাজ ও ভূমিখেকু। তারা বিভিন্ন সময়ে অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে বাদীর অসহায় পরিবারের সবতবাড়িতে হামলা, পরিবারের লোকজনদের নির্যাতন ও হুমকি দিয়ে আসছে। পাশাপাশি মিথ্যা মামলা দিয়েও তাদের হয়নারী করা হয়। এতে সবসময় আতঙ্কিত থাকেন পরিবারের লোকজন। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। কিন্ত পুলিশ চলে যাওয়ার পর আবারও শুরু হয় অত্যাচার।
সরেজমিন ঘটনাস্থলে গেলে উদয়পুর গ্রামের মুরব্বি তাজ উদ্দিন, ইরন খাঁ, আব্দুল মতিন, সমছু মিয়া, মাওলানা আব্দুল কাদির, যুবনেতা রুশন আলী, আমির হোসেন ছমির, আরজ আহমদ জাবেদ, রাজু মিয়া ও লোকমান হোসেনসহ অনেকেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ করেন। তারা বলেন, অভিযুক্তদের কর্মকান্ডে শুধু আওলাদ আলম চৌধুরীর পরিবারই নয়, পুরো গ্রামবাসী অতিষ্ঠ। অসহায় পরিবারের উপর নির্যাতন বন্ধ ও গ্রামের শান্তি শৃঙ্খলনা ফিরিয়ে আনতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান গ্রামবাসী।
এদিকে, বাদী পক্ষ এবং গ্রামের লোকজনদের আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত দাবি করেছেন অভিযুক্ত আকিকুর রহমান ছুরুক। আামদের দু’পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এনিয়ে আওলাদ আলম চৌধুরী পক্ষের বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা বিচারাধিন রয়েছে। ৫ জুনের ঘটনাটি অতির্কিত হামলা নয়, উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এতে ইটপাটকেলের আঘাতে আমিসহ উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছি।
এব্যাপারে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) গাজী আতাউর রহমান বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থ গ্রহন করা হবে।