রফিকুল ইসলাম জুবায়ের :: সিলেটের বিশ্বনাথের এক ছোট্ট শিশু রিফাত। বয়স যার মাত্র ২মাস ১৮ দিন। কিন্তু এই বয়সে জটিল এক রোগের কারণে সে আজ জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে। অথচ মাত্র ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা হলেই চিকিৎসার সুযোগ পাবে এই অবুঝ শিশুটি। তাই সমাজের বিত্তবান ও প্রবাসীদের কাছে সহায় সম্বলহীন রিফাতের দ্ররিদ্র পিতা-মাতা তাদের একমাত্র পুত্রের চিকিৎসার জন্য সাহায্য চেয়েছেন।
বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের তেলিকোনা গ্রামের বাসিন্দা, বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের সদস্য ও ফটো সাংবাদিক মো. নুর উদ্দিন ২০০০ সালে একই গ্রামের রওশন আরা বেগমকে বিয়ে করেন। বিয়ের দুবছর পর এই দম্পতির ঘর আলো করে জন্ম হয় এক পুত্র সন্তানের। কিন্তু জন্মের কয়েক মাসের মধ্যে বিভিন্ন রোগে ভোগে শিশুটি মৃত্যুবরণ করে। এভাবে পর্যায়ক্রমে সাংবাদিক নুর উদ্দিনের ঘরে আরো দুটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। কিন্ত কেউই বেঁচে থাকেনি। তারাও প্রথম পুত্রের মতো বিভিন্ন রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে অল্প বয়সে বাবা মায়ের শত চেষ্টার পরও পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। এর কয়েক বছর পর ২০০৭ সালে তাদের ঘরে এবার জন্ম নেয় এক কন্যা সন্তানের। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে তাদের প্রথম কন্যা সন্তান ৭ম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী তানিয়া আক্তার ইমা এ বৎসর তের বছর বয়সে পদার্পন করেছে। এছাড়া ২০১২ সালে নুর উদ্দিন দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় আরেকটি কন্যা সন্তান। তার নাম নুসরাত বিল্লাহ সিমা। সে ২য় শ্রেণীর ছাত্রী। তিনটি পুত্র সন্তানকে অনেকটা অকালে হারিয়ে আর্থিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এই দম্পতি দুটি কন্যা সন্তান পেয়ে কিছুটা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন।
চলতি বছরের ৬ এপ্রিল তাদের ঘরে জন্ম নেয় একটি পুত্র সন্তান। নাম রাখা হয় রিফাত উদ্দিন। তিন পুত্র হারানোর পর স্রষ্টার অশেষ রহমতে যখন রিফাতের জন্ম হয়, তখন স্বাভাবিক কারণে শিশুটির বাবা-মায়ের মনে বেশ আনন্দ দেখা দেয়। আর দুই বোন ইনা ও সিমা একমাত্র ভাই পেয়ে দারুন খুশী। কিন্তু তাদের সকলের মনে এই আনন্দের রেশ কাটতে না কাটতেই রিফাতের অসুস্থতা গোটা পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। জন্মের পনের দিন পর থেকে হঠাৎ রিফাতের পায়খানা বন্ধ হয়ে গেলে পিতা নূর উদ্দিন পুত্রকে নিয়ে চিকিৎসকের শরনাপন্ন হন। এরপর বিভিন্ন পরীক্ষা নিরিক্ষার করে চিকিৎসক জানান শিশুটির পায়ুপথ সঠিকভাবে কাজ করছেনা বিধায় তার পায়খানা হচ্ছেনা। তাৎক্ষণিকভাবে পায়ুপথে গ্লিসারিন দিয়ে পায়খানার কাজ করানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসক। কিন্তু পরবর্তীতে স্থায়ী কোন সমাধান হয়নি। স্বাভাবিকভাবে পায়খানা না হওয়ায় বাচ্চার পেট ফুলে যাওয়া’সহ নানা উপসর্গ দেখা দেয়। এসময় তারা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরনাপন্ন হলে তারা যত দ্রুত সম্ভব রিফাতের পায়ুপথে একটি অপারেশন করার নির্দেশ দেন। যার প্রাথমিক ব্যয় হবে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। কিন্তু সাংবাদিক নুর উদ্দিনের আর্থিক অবস্থা নিতান্ত খুবই খারাপ হওয়ায় একমাত্র পুত্রের চিকিৎসা করতে পারছেন না। এমতাবস্থায় সমাজের বিত্তবান ও প্রবাসীরা একটু সহযোগিতার হাত বাড়ালে ছোট্ট শিশু রিফাতকে নতুন এক জীবনের সন্ধান দেওয়া সম্ভব হবে।
এ ক্ষেত্রে যদি কারো পক্ষে এ ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব না হয়, তাহলে অন্তত ১২জন যদি ১০হাজার টাকা করে কিংবা ২৪জন ৫হাজার টাকা করে প্রদান করেন তাহলে অনেকটা সহজেই এই অর্থ সংগ্রহ করা সম্ভব। বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের পক্ষ হতে ইতিমধ্যে এরকম আরও একাধিক মানবিক আবেদন কো হয়েছে এবং বিত্তবানদের অভূতপূর্ব সহযোগিতার কারণে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকারও বেশী আর্থিক সহযোগিতা ভোক্তভোগীরা পেয়ে উপকৃত হয়েছেন। মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং সবার সহযোগিতায় যদি শিশু রিফাত সুস্থ হয়ে উঠে তাহলে সাংবাদিক নুর উদ্দিনের পরিবারে ফিরে আসবে অনাবিল সুখ ও শান্তি।