AM-ACCOUNTANCY-SERVICES-BBB

জগন্নাথপুরে নিজ স্টুডিও থেকে ফটোগ্রাফারের গলাকাটা লাশ উদ্ধার

বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: ডিসেম্বর - ৬ - ২০১৯ | ১২: ৩৭ পূর্বাহ্ণ

মো. আব্দুল হাই, জগন্নাথপুর থেকে :: সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলা সদরস্থ নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে আনন্দ সরকারের (২৩) নামের এক ফটোগ্রাফারের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজের ৩দিন পর বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাত ৮টায় তার লাশ উদ্ধার করে সিআইডি।

নিহত আনন্দ সরকার নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার বাইনারী ইউনিয়নের বটতলী গ্রামের সুণীল চন্দ সকারের ছেলে ও জগন্নাথপুর পৌর শহরের সিএ মার্কেট বাসস্ট্যান্ডস্থ কামাল কমিউনিটি সেন্টারের মার্কেটের আনন্দ স্টুডিও’র পরিচালক।

জানা গেছে, আনন্দ সরকার ৫বছর ধরে জগন্নাথপুর পৌর শহরের একটি স্টুডিওতে প্রথমে চাকুরি করেন। প্রায় বছর খানেক পূর্বে তিনি ওই স্টুডিও’র চাকুরী ছেড়ে দিয়ে জগন্নাথপুর পৌর শহরেই ‘আনন্দ স্টুডিও’ নামে নিজেই একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করেন এবং তার পরিবার নেত্রকোনা জেলার গ্রামের বাড়িতে বসবাস করায় তিনি ভিতরের একটি কক্ষেই বসবাস করেন। দোকানের জন্য একটি ফটোকপি মেশিন ক্রয় করতে গত সোমবার (২ ডিসেম্বর) এনজিও সংস্থা আশা থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ উত্তোলন করেন। ওই দিন রাত ৮টায় মায়ের সাথে মোবাইল ফোনে শেষ কথা হয় আনন্দ সরকারের। এরপর থেকে আনন্দ সরকারের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়ায় তার সাথে যোগাযোগ করতে না পেয়ে বৃহস্পতিবার নেত্রকোনা থেকে জগন্নাথপুর ছুটে আসেন তার মা জ্যোছনা রানী সরকার। তখন তিনি আনন্দ সরকারের দোকান তালাবদ্ধ দেখতে পেয়ে পাশপাশ দোকানের ব্যবসায়ীর কাছে জানতে চান তার পুত্রের সন্ধান। এরপর তিনি থানা পুলিশের কাছে ছুটে যান।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই স্টুডিওটি বাহির থেকে তালাবদ্ধ থাকায় স্থানীয় অনেকেই মনে করেছিলেন আনন্দ সরকার হয়তোবা কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানে ছবি তোলার জন্য চলে গেছেন। একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার বেলা ২টায় দোকান ঘরের ভেতর থেকে লাশের বিদকুট গন্ধ বের হতে থাকলে লোকজনদের সন্ধেহ হয় দোকানের ভিতরেই আনন্দ সরকারের লাশ রয়েছে। খবর পেয়ে সিলেট শহর থেকে সিআইডির এক বিশেষজ্ঞ টিম ঘটনাস্থলে পৌছে। এরপর দোকান ঘরের তালা ভেঙে ভিতরের শয়ন কক্ষে আনন্দ সরকারের হাত-পা বাঁধা ও গলাকাটা অবস্থায় তার লাশ দেখতে পায় সিআইডি ও থানা পুলিশ। নিহতের লাশ উদ্ধার করে উপজেলা সদরের মর্গে রাখা হয়েছে বলে জানা যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এনজিও থেকে ঋণের টাকা উত্তোলনের পর দুর্বৃত্তরা টাকার লোভে আনন্দ সরকারের নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।

এদিকে, ছেলে এমন নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনায় আনন্দ সরকারের মা জ্যোছনা রানী সরকারের বুকফাটা আহাজারীতে আর্তনাদে এক হ্নদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এঘটনায় ঘটনায় বিষ্মিত এলাবাসী। একটি নিরপরাধ যুবককে নির্মমভাবে হত্যা করায় অনেকেই নিরবে চোখের জল ফেলতে দেখা যায়। আনন্দ সরকার স্টুডিও’র চাকুরি ছেড়ে নিজ নামে আনন্দ স্টুডিও দোকান খুলে তার অভাব অনটনের সংসারের হাল ধরেছিলেন।

আরো সংবাদ