AM-ACCOUNTANCY-SERVICES-BBB

শফিক চৌধুরী কি পারবেন ইতিহাস গড়তে!

বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: নভেম্বর - ৩০ - ২০১৯ | ১২: ০৯ পূর্বাহ্ণ

রফিকুল ইসলাম জুবায়ের :: আগামী ৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। আসন্ন এই সম্মেলনে সভাপতি পদে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী নির্বাচিত হয়ে কি পারবেন আ ন ম শফিকুল হকের মতো ইতিহাস গড়তে! বিভিন্ন জনমত, গোয়েন্দা রিপোর্ট ও ক্লিন ইমেজের কারণে এবং ২৪ ঘন্টার রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত শফিকুর রহমান চৌধুরী অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন। তবে শেষ মুহুর্তে কাউন্সিল বা দলীয় প্রধান সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের মর্যাদাপূর্ণ এই পদে কাকে নির্বাচিত করেন তা এখন অপেক্ষা।

পূণ্যভূমি সিলেট নিজস্ব সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, রাজনীতি ও অর্থনীতির কারণে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে স্বকীয় পরিচিতি রয়েছে। যার কারণে সিলেটের রাজনীতি নিয়ে জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোর হিসেব-নিকাশও আলাদা থাকে। গত তিন দশক ধরে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদে যারাই ছিলেন তাদের অনেকেরই দীর্ঘ বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ঐতিহ্য রয়েছে। এতে নিজস্ব যোগ্যতা বলেই বিশ্বনাথে জন্ম নেওয়া বেশ ক’জন রাজনীতিবিদ তিন যুগ ধরে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন অত্যন্ত দক্ষতার সাথে। ক্লিন ইমেজ ধারী ও স্বজ্জন রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত বিশ্বনাথের প্রয়াত আ ন ম শফিকুল হক ১৯৭৭ সাল থেকে সিলেটে জেলা আওয়ামী লীগে বিভিন্ন পদ পেরিয়ে ১৯৮৬ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০২ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম শফিকুর রহমান চৌধুরী।

যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগে নেতৃত্ব দানকারী বিশিষ্ট এই রাজনীতিবিদ বিলাতের মায়া ত্যাগ করে বাংলাদেশের স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের বাঘা বাঘা প্রার্থীদের পেছনে ফেলে দলীয় মনোনয়ন পান এবং তখনকার রার্নিং এমপি ও বিএনপির জানু রাজনীতিবিদ এম ইলিয়াস আলীকে পরাজিত করে জাতীয় রাজনীতিতে দারুণ এক চমক দেখান শফিকুর রহমান চৌধুরী। স্থানীয় রাজনীতিতে অভাবনীয় এই সাফল্যে দলীয় প্রধানও তাকে যথাযত মূল্যায়ন করে সরাসরি সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব প্রদান করেন। স্থানীয় উন্নয়ন ও জেলার রাজনীতিতে প্রায় ২৪ঘন্টা সক্রিয় থেকে এবং সরকারি দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও সকল প্রকার লোভ-লালসার উর্ধ্বে থেকে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করায় বৃহত্তর সিলেটে একজন সৎ ও ক্লিন ইমেজের রাজনীতিবিদ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন শফিক চৌধুরী।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আসন্ন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি পদে মূল আলোচনায় রয়েছেন তিন নেতা। তারা হলেন- বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট-৩ আসনের এমপি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন। এই তিনজনই সভাপতি হওয়ার মতো যোগ্য নেতা।

তবে, মাহমুদুস সামাদ চৌধুরী রানিং এমপি হওয়ায় এবং সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদে বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিনের ভাই আসাদ উদ্দিন শক্তিশালী প্রার্থী হওয়ায় সভাপতি পদে শফিকুর রহমান চৌধুরীর ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। আর বিশেষ করে দলের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন শফিক চৌধুরী। দলের সিদ্ধান্ত মেনে নেতাকর্মীদের চাওয়া স্বত্বেও বিগত দুটি জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে বিরত থেকে আনুগত্যের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনের মাধ্যমে দল ও দলীয় প্রধানের কাছে তিনি আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। দলের জন্য সবসময় কাজ করেন বলে তিনি ‘চব্বিশ ঘন্টার রাজনীতিবিদ’ হিসেবেও পরিচিত। এজন্য তিনি সভাপতি হলে দল আরো গতিশীল হবে এমনটাই তৃণমূল নেতাকর্মীদের আশাবাদ। এছাড়া শেষ মুহুর্তে শফিক চৌধুরীর পক্ষে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র কাছে অনুরোধতো থাকবেই।

ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে যদি বিশ্বনাথের কৃতি সন্তান শফিকুর রহমান চৌধুরী সভাপতি নির্বাচিত হন, তাহলে তিনি গড়বেন আ ন ম শফিকুল হকের মতো রেকর্ড। আর সেই সাথে গড়বেন আরো এক নতুন ইতিহাস। তিনি প্রথম বিশ্বনাথী (সম্ভবত সিলেটের প্রথম ব্যক্তি) যিনি এমপি ও সাধারণ সম্পাদকের পর সভাপতি নির্বাচিত হলেন।

এখন অপেক্ষা শেষ মুহুর্তে দলীয় কাউন্সিল বা দলের প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের মর্যাদাপূর্ণ এই পদে কাকে নির্বাচিত করেন।

আরো সংবাদ