AM-ACCOUNTANCY-SERVICES-BBB

ভারতে বাবরি মসজিদের জায়গায় হবে মন্দির : সর্বোচ্চ আদালতের রায়

বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: নভেম্বর - ৯ - ২০১৯ | ২: ৪৪ অপরাহ্ণ

বিশ্বনাথনিউজ২৪ :: অবশেষে ভারতের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির গড়ার জন্যই রায় দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি সাংবিধানিক বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে শনিবার এই রায় দিয়েছে।
রায়ের আদেশে মন্দির গড়ার জন্য সরকারকে একটি ট্রাস্ট গঠন করতেও বলা হয়েছে। এই ট্রাস্ট গঠন করে তিন মাসের মধ্যে বাবরি মসজিদের জমির ভেতর ও বাইরের প্রাঙ্গন রামজন্মভূমি ট্রাস্টকে হস্তান্তর করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি অযোধ্যার বিখ্যাত কোনো স্থানে একটি মসজিদ নির্মাণ করতে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে পাঁচ একরের একখণ্ড জমি বরাদ্দ দিতেও রায়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে বলা হয়েছে।
হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতে গত কয়েক দশকে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু ছিল এই বিরোধপূর্ণ জমি। সেখানে হিন্দুদের দেবতা রামের জন্মভূমি বলে দাবি করা হয়েছে। ১৯৯২ সালে মসজিদটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা। তখন দাঙ্গায় দুই হাজারের বেশি লোক নিহত হয়েছেন।
কট্টরপন্থী হিন্দুরা দাবি করেন, বাবরি মসজিদের জায়গাতেই ভগবান রামের জন্ম হয়েছিল এবং একটি রামমন্দির ভেঙ্গে মোগল আমলে সেখানে মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল। ব্রিটিশ সরকার ভেতরের অংশটা মুসলিমদের আর বাইরে চত্বরটা হিন্দুদের ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু ১৯৪৯ সালে মসজিদের ভেতরে কে বা কারা রামের মূর্তি রেখে দেয়। মুসলিমরা তখনই প্রতিবাদ করেন এবং সরকার জমিটিকে বিতর্কিত ঘোষণা করে তালা বন্ধ করে দেয়। জমির মালিকানা কার- সেটা ঠিক করতে সেবছরই আদালতে প্রথম মামলা হয়। এরপরে ফৈজাবাদের জেলা আদালত ১৯৮৬ সালে তালা খুলে হিন্দুদের পূজার অনুমতি দেন। আর তখন থেকেই রাম জন্মভূমি আন্দোলন জোরদার হয়ে ওঠে। অন্যদিকে মামলাও চলতে থাকে। ২০১০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় যে বিতর্কিত জমিটি তিনভাগ হবে। দুই ভাগ পাবেন হিন্দুরা আর এক ভাগ পাবে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড। তার বিরুদ্ধে সবপক্ষই সুপ্রিম কোর্টে যায় ২০১১ সালে। সুপ্রিম কোর্ট আদালতের বাইরে সব পক্ষকে নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তা ব্যর্থ হওয়ায় মামলাটি বিশেষ বেঞ্চ শুনানি শুরু করে। সুপ্রিম কোর্টে একটানা ৪০ দিন শুনানি হওয়ার পরে রায় লেখার জন্য মাসখানেক সময় নেয়া হয়। এরপর শনিবার রায় প্রদান করেন আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কোনো সুযোগ নেই। কারণ এটিই ভারতের সর্বোচ্চ আদালত।
এদিকে, অযোধ্যায় ইতোমধ্যেই নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত ১২ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। অযোধ্যায় কারফিউ জারি রয়েছে গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে। রায় ঘোষণার আগে শুক্রবার প্রধান বিচারপতি গগৈ রাজ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উত্তরপ্রদেশের শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেছিলেন। উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটক ও রাজস্থান-সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে আজ স্কুল-কলেজ সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ রাখা হয়েছে। শনিবার হওয়ার কারণে বেশির ভাগ সরকারি অফিসেও ছুটি।

আরো সংবাদ