AM-ACCOUNTANCY-SERVICES-BBB

বিশ্বনাথে তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় অবেশেষে মামলা দায়ের

বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: অক্টোবর - ৩০ - ২০১৯ | ৩: ৫৭ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের বিশ্বনাথে ১৮ বছর বয়সী এক তরুণীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ১০দিন আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনায় অবেশেষে থানায় মামালা দায়ের করা হয়েছে। পাশবিকতার শিকার হওয়ার ওই তরুণীর পিতা বাদি হয়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের কোনাউড়া নোয়াগাঁও গ্রামের হাজী মনফর আলীর পুত্র হাবিবুর রহমান মিঠু (২৪)’কে প্রধান আসামী করে বিশ্বনাথ থানায় এই মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং-২৩। অপহরণ ও ধর্ষণে সহযোগিতা করায় মামলার আসামী করা হয়েছেন হাবিবুর রহমান মিঠুর পিতা হাজী মনফর আলী (৭০) ও বড় ভাই শানুর আলী (৪৫)-কেও। এছাড়া মামলায় আরো ৩/৪ জনকে অজ্ঞাতানা আসামী করা হয়েছে।
এদিকে, ভিকটিম তরুণীকে মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি’তে প্রেরণ করা হয়েছে।
জানা যায়, মামলার প্রধান অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান টিটুর বসতবাড়ির পার্শ্ববতি একটি বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতেন ওই তরুণী। সে উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের নওধার বৈরাগীরগাঁও গ্রামের একটি হত-দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। গৃহকর্মীর কাজ করাকালীন অবস্থায় প্রায় ৬মাস পূর্বে তার সঙ্গে পরিচয় হয় হাবিবুর রহমান টিটুর। একপর্যায়ে তাদের দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। গত ১১ অক্টোবর দুপুরে ওই তরুণীকে নিজ বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় টিটু। এরপর ১০দিন টিটু তার নিজ বাড়ির পার্শ্ববর্তি একটি নির্জন ঘরে তরুণীকে আটকে রেখে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বকভাবে একাধিকবার ধর্ষণ করে। নিখোঁজের ঘটনায় তরুণীর পিতা গত ১৮ অক্টোবর বিশ্বনাথ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। এরপর ২০ অক্টোবর হাবিবুর রহমান টিটুর বাড়িতে যান বিশ্বনাথ থানার এসআই নবী হোসেন। তখন ভিকটিম তরুণী ও অভিযুক্ত টিটুকে থানায় নিয়ে আসার জন্য পরিবারকে বলেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। এরপর ওই দিন বিকেলে পরিবারের সদস্যরা ভিকটিম তরুণী ও অভিযুক্ত টিটুকে থানায় নিয়ে আসেন। তখন তরুণীকে বিয়ে করতে রাজি হওয়ায় বিয়ে পড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে স্থানীয় মাতব্বররা থানা পুলিশের কাছ থেকে তাদেরকে তরুণীর বাড়িতে নিয়ে যান। কিন্ত বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর স্থানীয় নওধার পূর্বপাড়া গ্রামের মুরব্বি সোনা মিয়া, আহমদ আলী, আলী হোসেন, আবদুল গফুর ও অভিযুক্ত টিটুর ভগ্নিপতি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের গোয়াহরি গ্রামের মর্তুজ আলী সহ মাতব্বরা ধর্ষক টিটুকে তার স্বজনের কাছে হস্তান্তর করেন এবং তরুণীর ইজ্জতের মূল্য হিসেবে তার অসহায় পরিবারকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা প্রদানের প্রস্তাব দেন। কিন্ত তাতে তরুণীর পরিবার অসম্মতি জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে টিটুর পরিবারের পক্ষ থেকে তরুণীর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। এবিষয়ে বিশ্বনাথ নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম -এ প্রকাশিত হলে টনক নড়ে প্রশাসনে। কিন্ত মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চেষ্টা চালিয়ে যান ওই মাতব্বর ও দালালরা। একপর্যায়ে মঙ্গলবার রাতে থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বিশ্বনাথ থানার সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) মোহাম্মদ নবী হোসেন বলেন, ভিকটিমকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি’তে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার আসামীদেকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

আরো সংবাদ