AM-ACCOUNTANCY-SERVICES-BBB

সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বিশ্বনাথের ১৬৮ জনের মধ্যে ৫৬ জনই বহিরাগত

বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: সেপ্টেম্বর - ২৯ - ২০১৯ | ৯: ৩৪ অপরাহ্ণ

বিশ্বনাথনিউজ২৪ :: সদ্য সম্পন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘সহকারী শিক্ষক’ পদের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া বিশ্বনাথ উপজেলার বহিরাগতদের অন-লাইন জন্ম নিবন্ধন কার্ড যাচাই-বাচাই করে বাতিল করার ও মৌখিক পরীক্ষার পর সহকারী শিক্ষক পদে কোন বহিরাগতকে নিয়োগ না দেওয়ার দাবীতে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া ১৬৮ জনের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ৫৬ জন বহিরাগতকে চিহ্নিত করে উপজেলার সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকরা এসব চিহ্নিত হওয়াদের নাম ও রোল নম্বর উল্লেখ করে রোববার সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছেন। এছাড়া ইতিমধ্যে ভ‚য়া বা জাল নাগরিক সনদ সংগ্রহ করে বা জালিয়াতি করে শিক্ষক নিয়োগ না দেওয়ার দাবিতে বিশ্বনাথে বিভিন্ন কর্মসূচীর ডাক দিয়েছেন সচেতন মহল।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২৪মে প্রাথমিকের ‘সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা-২০১৮’ গত ২৪ মে অনুষ্ঠিত হয়। গত ১৫ সেপ্টেম্বর লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে দেখা যায় লিখিত পরীক্ষায় প্রাথমিকভাবে বিশ্বনাথ উপজেলার ১৬৮ জন উত্তীর্ণ হন। এর মধ্যে ৫৬ জনই বিশ্বনাথের স্থায়ী নাগরিক নন। এছাড়া লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়াদের অন-লাইন জন্মনিবন্ধন কার্ড সঠিকভাবে যাচাই-বাচাই করা হলে বা সঠিক তদন্ত হলে বহিরাগতদের সংখ্যা ৭০-৮০ জনে দাঁড়াতে পারে। কারণ বহিরাগতরা জালিয়াতি করে ভ‚য়া নাগরিক সনদ সংগ্রহ করেছে। আগামী ১২-২৬ অক্টোবর লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া প্রার্থীরা মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিবে। আর মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া প্রার্থীরা চ‚ড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হবেন। তাই মৌখিক পরীক্ষার পূর্বে প্রত্যেক প্রার্থীর কাছ থেকে তাদের অন-লাইন জন্ম নিবন্ধন কার্ড সংগ্রহ করে তা সঠিকভাবে যাচাই-বাচাই করে বহিরাগতদের বাদ দিয়ে বিশ্বনাথ উপজেলা কৌঁটায় সঠিক প্রার্থীকে সহকারি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার এবং ভ‚য়া বা জাল নাগরিক সনদ সংগ্রহনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।
বিশ্বনাথবাসীর পক্ষে প্রদান করা স্মারকলিপি গ্রহণ করে সিলেট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বায়জিত খান বলেন, ইতিমধ্যে কাগজপত্র জমাকালে ভ‚য়া সনদে আবেদনকারী ৩ জনকে বাতিল করা হয়েছে। বাকিদের কাগজপত্রও যাছাই বাছাই করা হবে। তবে, তিনি ইউনিয়ন নাগরিক সনদ না দিতে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের আরোও সর্থক থাকা ও যাচাই-বাছাই করে দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান।
এদিকে সিলেটের জেলা প্রশাসক কাজী এম. এমদাদুল ইসলাম দেশের বাইরে থাকায় সহকারী জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোছা. শারমিন সুলতানা অভিযোগটি গ্রহণ করে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন বলে আশ্বাস দেন।
বিশ্বনাথের সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকদের স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি দেওয়ার সময় পৃথক পৃথক কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বনাথের কর্মরত সাংবাদিক মোসাদ্দিক হোসেন সাজুল, জাহাঙ্গীর আলম খায়ের, প্রনঞ্জয় বৈদ্য অপু, রোহেল উদ্দিন, কামাল মুন্না, নবীন সোহেল, ফটো সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম শফিক।
উল্লেখ্য, গত ২০১৮ সালের ২৬ জুন অনুষ্ঠিত (২০১৪ সালের স্থগিতকৃত) ‘সহকারী শিক্ষক’ নিয়োগ লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া ৭৬ জনের মধ্যে ২ ও ৪ আগস্ট অনুষ্ঠিত মৌখিক পরীক্ষায় ২৫ জন প্রার্থী মৌখিক পরীক্ষায় চ‚ড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হন। এর মধ্যে সেখানে উত্তীর্ণ হওয়া বহিরাগতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মৌখিক পরীক্ষা হওয়ার সাথে সাথেই ‘সিলেট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)’সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন বিশ্বনাথের সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকবৃন্দ। পরবর্তিতে শিক্ষা অধিদপ্তরের একাধিক তদন্ত কমিটির তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ৭ জনকে বাতিল করেন। এসময় উপজেলাবাসী মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করেছিলেন।

আরো সংবাদ