AM-ACCOUNTANCY-SERVICES-BBB

বিশ্বনাথে উন্মুক্ত খালে মাছ ধরতে পারছেন না মৎস্যজীবীরা : দু’পক্ষের মধ‌্যে উত্তেজনা

বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: সেপ্টেম্বর - ২৪ - ২০১৯ | ৪: ৪৬ অপরাহ্ণ

বিশ্বনাথনিউজ২৪ :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার গুনিয়া খাল উন্মুক্ত থাকলেও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোকের বাঁধার কারণে মৎস্যজীবীরা খালে মাছ ধরতে পারছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এনিয়ে উপজেলার প্রতাবপুর ও মারখগাঁও গ্রামের লোকজনদের সাথে আমতৈল গ্রামের মৎস্যজীবীদের ধরে বিরোধ চলে আসছে। যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, উপজেলার মদনপুর মৌজায় অবস্থিত লামাকাজী ইউনিয়নের মাখরগাঁও ও খাজাঞ্চী ইউনিয়নের প্রতাবপুর গ্রামের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত গুনিয়া খাল। খালের দু’পাশে রয়েছে দুটি হাওর। স্থানীয় জনসাধারণের পানি নিস্কাশন ও পার্শ্ববর্তি হাওরের কৃষি কাজের প্রয়োজন থাকায় খালটি বড় হলেও বন্দোবস্তের বহির্ভূত হিসেবে রেকর্ড বিদ্যমান। ফলে এই খাল কখনো জলমহালের তালিকাভূক্ত হয়নি। বর্ষা মৌসূমে খালটি পানিতে ভরে গেলে স্থানীয় (মাখরগাঁও ও প্রতাবপুর গ্রামের) লোকজন মৎস্যজীবীর কাছে মৎস্যজীবীর কাছে ভেলজাল বিক্রি করেন এবং শুকনো মৌসূমে খালে বাঁধ দিয়ে মাছ ধরে বিক্রি করেন। খালটি উন্মুক্ত থাকলেও মাখরগাঁও ও প্রতাবপুর গ্রামের লোকজনদের বাঁধার কারণে পার্শ্ববর্তী আমতৈল গ্রামের প্রকৃত মৎস্যজীবীরা খালে মাছ ধরতে পারেন না। এমন অভিযোগে গত ৩ জুলাই প্রতাবপুর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য সহিদ মিয়া, মাখরগাঁও গ্রামের দুদু মিয়া, রইছ আলী ও সৈয়দ আলীর বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন মৎস্যজীবীরা। অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, উক্ত ব্যক্তিরা সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্ষা না করে দীর্ঘদিন ধরে অমসৎজীবি দ্বারা মাছ আহরণ করে সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আত্মসাৎ করছেন। তাই প্রধানমন্ত্রীর শ্লোগান ‘জাল যার জলা তার’ নীতির আলোকে সরকারি রাজস্ব রাজস্বের বিনিময়ে গুনিয়া খালটি প্রকৃত মৎস্যজীবিদের অনুকুলে বন্দোবস্ত দিতে সরকারের প্রতি জোরদাবি জানান মৎস্যজীবীরা।
তবে অভিযুক্ত জানান, মাখরগাঁও ও প্রতাবপুর সহ পার্শ্ববর্তী অন্যান্য গ্রামের লোকজন হাওওে কৃষি কাজের জন্য শুকনো মৌসুমে খালে বাঁধ দিয়ে পানি জমা করে সেচ কাজে ব্যবহার করেন। বর্ষা মৌসুমে স্থানীয় মৎস্যজীবীর কাছে তারা ভেলজাল বিক্রি করেন এবং বিক্রির টাকা খালে বাঁধ নির্মাণের কাজে ব্যয় করেন।
এদিকে, মৎস্যজীবীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সরজমিন খালটি পরিদর্শন করেন প্রয়াগমহল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা (তশিলদার) আব্দুস শুকুর। পরিদর্শনকালে খালের উপর একটি ভেলজাল এবং পানিতে বাঁশের খুটি পুতে রাখা অবস্থায় তিনি দেখতে পান বলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর প্রেরণকৃত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন। পরবর্তীতে গত ১৫ সেপ্টেম্বর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)’র কার্যালয়ে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানী শেষে গুনিয়া খালে মাছ ধরতে সবার জন্য উন্মুক্ত রাখতে এবং খালে কোন ব্যক্তি কর্তৃক বাঁধ নির্মাণ না করতে আদেশ প্রদান করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতেমা-তুজ-জোহরা। এই আদেশের পরদিনই সকালে আমতৈল গ্রামের শতাধিক মৎস্যজীবী খালে মাছ ধরতে নামলে তাদের বাঁধা দেন মাখরগাঁও ও প্রতাবপুর গ্রামের লোকজন। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। একপর্যায়ে খাল ত্যাগ করেন মৎস্যজীবীরা। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। মৎস্যজীবীরা খালে মাছ ধরতে নামলে অনাকাংখিত ঘটনা ঘটতে পাওে এমনটাই আশংকা করছেন এলাকবাসী।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতেমা-তুজ-জোহরা বলেন, গুনিয়া খালে সবার জন্য মাছ ধরা উন্মুক্ত ও বাঁধ নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। তবে আইন শৃংখলার অবনতি হয় এমন ধরণের কোন কাজ করা যাবে না। বাঁধ নির্মাণ করলে অথবা মাছ ধরতে কাউকে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

আরো সংবাদ