AM-ACCOUNTANCY-SERVICES-BBB

বিশ্বনাথে দাফনের ২৮দিন পর কবর থেকে মহিলার লাশ উত্তোলন

বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: সেপ্টেম্বর - ২ - ২০১৯ | ১০: ৪৪ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের বিশ্বনাথে দাফনের ২৮দিন পর কবর থেকে আয়ফুল বেগম (৫৫) নামের এক মহিলার লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে আজ সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতেমা-তুজ-জোহরা’র উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করা হয়। আয়ফুল বেগম উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের দোহাল গ্রামের মৃত ফজর আলীর স্ত্রী।
জানা গেছে, গত ৩ আগস্ট দিবাগত রাতে নিজ বসতঘরে মারা যান আয়ফুল বেগম। পরদিন তাকে দাফন করা হয়। আয়ফুলকে হত্যার অভিযোগ এনে গত ৭ আগস্ট তার বড় মেয়ে নাসিমা বেগম থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই দিনই জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে একই গ্রামের মনু মিয়ার ছেলে (আয়ফুলের ভাইয়ের মেয়ের জামাই) নুর উদ্দিন (৩৫)’কে আটক করে থানা পুলিশ। প্রাথমিক বিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে নূর উদ্দিন স্বীকার করে সে লাখ টাকা চুরি করতে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে আয়ফুল বেগমকে হত্যা করেছে। এঘটনায় গত ৮আগষ্ট নুর উদ্দিনকে একমাত্র আসামি করে বিশ্বনাথ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের মেয়ে নাসিমা বেগম।
আয়ফুল বেগমের মেয়ে নাসিমা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, আমার মা আয়ফুল বেগম গত ২৮ জুলাই দুলাভাই নুর উদ্দিনকে সাথে নিয়ে ঘর নির্মাণের জন্যে একটি এনজিও সংস্থা থেকে এক লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। এরপর থেকে এই টাকা আত্মসাৎ করতে সে (নূর উদ্দিন) আমার মাকে কৌশলে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে আসছিল। একইভাবে গত ৩ আগষ্ট রাতেও মাকে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে দেয় নুর উদ্দিন। ওই রাতেই কোনো এক সময়ে নিজের শয়ন কক্ষে তিনি মারা যান। পরদিন সকালে সবার আগে রহস্যজনকভাবে চা নিয়ে এসে আমার মাকে নুর উদ্দিন ডাকাডাকি করে। পরে লোকজন দরজা খুলে মাকে উদ্ধার করেন। এ সময় তার মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছিল এবং তার বুক ফুলা ছিল। কক্ষের কার্পেটের নীচে ছিল ঘুমের ট্যাবলেটের খোসা। মাকে উদ্ধার করা হলেও তার পুরো শয়ন কক্ষ খুঁজে এক লাখ টাকার কোনো হদিস মেলেনি। টাকার বিষয়ে কিছু জানো কিনা-এমন প্রশ্ন করলে নুর উদ্দিন সন্দেহজনক কথাবার্তা বলে। নাসিমা বেগম বলেন ‘আমার মায়ের হত্যাকারী নূর উদ্দিনের ফাঁসি চাই।’
এদিকে, ঘটনার সুষ্ট তদন্তের স্বার্থে ও মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয় করতে নিহত আয়ফুল বেগমের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য অনুমতি প্রার্থনা করে আদালতে আবেদন জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার এসআই দেবাশীষ শর্ম্মা। এরপর আদালতের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতেমা-তুজ-জোহরা’র উপস্থিতিতে সোমবার কবর থেকে আয়ফুল বেগমের লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের মর্গে প্রেরণ করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলমগীর, ইউপি সদস্য জামাল মিয়া, বিশ্বনাথ থানার এসআই মিজানুর রহমান, দেবাশীষ শর্ম্মা, সুলতান উদ্দিন প্রমুখ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই দেবাশীষ শর্ম্মা বলেন- আদালতের নির্দেশে আয়ফুল বেগমের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। আমরা আশাবাদি ময়না তদন্ত শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয় এবং মূল রহস্য উদঘাটন হবে।

আরো সংবাদ