বিশ্বনাথনিউজ২৪ :: টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলের পানিতে সৃষ্ট বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে বিশ্বনাথ উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রাম। ইতিমধ্যে বন্যার পানিতে উপজেলার মাহতাবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাহতাবপুর জামে মসজিদসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের বাড়িঘর পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। অনেক অঞ্চলে বন্যার পানির তলিয়ে গেছে আউশ ধানের জমি ও রোপা আমনের বীজতলা। সময়ের সাথে সাথে বিশ্বনাথ উপজেলাবাসীর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার আশংঙ্কা রয়েছে।
সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে ইতিমধ্যে সুরমা নদীর পাড়ে অবস্থিত বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের মির্জারগাঁও, মাহতাবপুর, মাধবপুর, কাজীবাড়ি, রাজাপুর, তিলকপুর, হাজারীগাঁও, আকিলপুর, রসুলপুর, সোনাপুর ও খাজাঞ্চী ইউনিয়নের বাওয়ানপুর, চরগাঁও, তেঘরী গ্রাম এলাকার মানুষ ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন। এছাড়া টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলের উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়া বাসিয়া নদীসহ উপজেলার সবকটি নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার দশঘর ও দেওকলস ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকাও প্লাবিত হচ্ছে বন্যার পানিতে।
শনিবার বিকেল বন্যা কবলিত উপজেলার লামাকাজী ও খাজাঞ্চী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়া ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিতাভ পরাগ তালুকদার। এসময় তারা ক্ষতিগ্রস্থদের খোঁজখবর নেন ও শীঘ্রই ক্ষতিগ্রস্থদের সরকারি ত্রাণ প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন। বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হলে সাধারণ মানুষকে সাথে সাথে সাহায্য করার জন্য উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষনিক নজরদারী করার অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন স্কুল, কমিউনিটি সেন্টারসহ আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার জন্য নির্দেশনাও প্রদান করেছেন তারা।
বন্যার পানিতে বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়া বিভিন্ন অঞ্চলের সড়কগুলো নিমজ্জিত থাকার কারণে এলাকার শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় যেতে ও সাধারণ মানুষকে নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে চলাচল করতে চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন। অনেক পুকুর ও মৎস্য খামারের মাছ ভেসে গেছে বন্যার পানিতে। বৃষ্টি ও ঢলের পানি আসা অব্যাহত থাকলে ক্ষতির পরিমাণ আরোও বৃদ্ধি পাবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমজান আলী বলেন, এলাকার নিম্নাঞ্চলে চাষকৃত প্রায় ১০ হেক্টর আউশ ধানের জমি ও প্রায় ২ হেক্টর রোপা আমনের বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে দু-একদিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে তেমন ক্ষতি হবে না। আর পানি না নামলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিতাভ পরাগ তালুকদার বলেন, টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলের পানিতে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি নজরদারী করা হচ্ছে ও বর্তমান পরিস্থিতি অবনতি হলে মানুষকে সাহায্য করার জন্য আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পরিস্থিতি অবহিত করা হচ্ছে ও সরকারি ত্রাণের জন্য যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য এস এম নুনু মিয়া বলেন, সকল ধরণের প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলা করার জন্য সরকার প্রস্তুত রয়েছেন। বর্তমান পরিস্থিতি উন্নতির জন্য বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রার্থনা করা হচ্ছে। সরকারি ত্রাণের জন্য উপজেলার পরিস্থিতি জানিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।