রফিকুল ইসলাম জুবায়ের :: পৃথিবীতে ধনী-গরিব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত প্রতিটি বাবা মায়ের স্বপ্ন থাকে তার আদরের সন্তান মানুষের মতো মানুষ হবে এবং প্রতিভার আলো ছড়াবে বিশ্বময়। বাবা মায়ের সেই স্বপ্ন ক’জন সন্তানই বা তা পুরণ করতে পারে! আর ক’জন বাবা-মা’ই বা তার সন্তানকে উপযুক্ত ছাত্র হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন! আমরা বিশ্বনাথ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বেশ ক’জন বাবা-মা এর সন্ধান পেয়েছি যারা সাধারণ পেশায় থেকেও নিজের শ্রম, মেধা আর সর্বস্ব দিয়ে সন্তানকে চিকিৎসকের মতো মহান পেশায় প্রতিষ্ঠিত করার দোরগোড়ায় পৌঁছেছেন। এই সব বাবা-মা’র অনেক সন্তান জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে শত অভাব অনটনকে সঙ্গী করে দেশের নামকরা মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তি হতে নিজেকে উপযুক্ত করে গড়ে তুলেছে। বিশ্বনাথ থেকে আগামীতে ডাক্তার হবে যারা তাদের নিয়ে আমাদের এই আয়োজন। আমাদের আগামী দিনের এইসব সোনালী তারকাদের পরিচয়, ডাক্তার হওয়ার কারণ’সহ নানান প্রশ্নের উক্তর খোজে পাবেন এই ফিচারে। আমরা চেয়েছিলাম এই ফিচারটি আরো সমৃদ্ধ হউক। এর জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারের ক্ষেত্রে কোন ক্রুটি করিনি। তবুও বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে অনেকেই বাদ পড়েছেন। তারা যদি আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন, তাহলে ভবিষ্যতে এজাতীয় প্রকাশনায় তাদের নিয়ে আরো বর্ধিত কলেবরে ফিচার করা হবে।
পবিত্র ঈদুল ফিতর-২০১৯ উপলক্ষে বিশ্বনাথের প্রথম অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘বিশ্বনাথ নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম’ কর্তৃক বিশেষ ম্যাগাজিন ‘উৎসব’ এ প্রকাশিত এই প্রতিবেদনটি নিউজ পোর্টালের পাঠকদের জন্যে তুলে ধরা হল।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে জাকির হাসান দিদার : বিশ্বনাথ উপজেলার বিশ্বনাথ ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামে ১৯৯১ সালের ১০ই অক্টোবর জাকির হাসান দিদার’র জন্ম। তার পিতার নাম মৃত আব্দুন নুর ও মাতার নাম নুরুন নেছা বেগম। তার বাবা ছিলেন একজন সমাজসেবী এবং মা একজন গৃহিনী। আর তার চাচা সাবেক শিক্ষক মরহুম আব্দুল মান্নান ছিলেন বিশ্বনাথ প্রবাসী এডুকেশন ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। জাকির হাসান দিদার রামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০৭ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পায়। সে ২০০৯ সালে সিলেট জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করে মানবসেবা করার মোক্ষম উপায় ও সুস্থ জাতি গঠনে ভূমিকা রাখার লক্ষ্যে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। বর্তমানে সে ওই কলেজে এফ.সি.পি.এস ট্রেনিং মেডিসিন এ অধ্যয়নরত। ভবিষ্যতে দিদার হৃদরোগ এর উপর উচ্চতর ডিগ্রি নিতে আগ্রহী। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) তার প্রিয় ব্যক্তিত্ব ও আদর্শ। তার প্রিয় খেলা ক্রিকেট ও ব্যাডমিন্টন। ভ্রমণ পিপাসু দিদার অবসরে বই পড়তে ভালবাসে।
নর্থ ইস্ট মেডিকেলে রুহুল আহমদ রুবেল : বিশ্বনাথ উপজেলার বিশ্বনাথ ইউনিয়নের কারিকোনা গ্রামে ১৯৯২ সালের ৫ই অক্টোবর মো. রুহুল আহমদ রুবেল’র জন্ম। তার পিতার নাম হাজী মো. আব্দুল বারী ও মাতার নাম মনোয়ারা বেগম। তার বাবা একজন অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং মা একজন গৃহিনী। রুহুল আহমদ রুবেল ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) কলেজিয়েট স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পায়। সে ২০১১ সালে বিশ্বনাথ ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি’তে জিপিএ ৩.৮০ পেয়ে ছেলে বেলার স্বপ্ন পুরণ করতে এবং মানব সেবার লক্ষ্যে সিলেট নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। বর্তমানে সে ইন্টার্নশিপ করতেছে। রুবেল ভবিষ্যতে সার্জাারির উপর উচ্চতর ডিগ্রি নিতে আগ্রহী। তার প্রিয় ব্যক্তিত্ব বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.), এরপর তার বাবা। তার প্রিয় খেলা ক্রিকেট, ফুটবল ও ব্যাডমিন্টন। ভাল লাগে ক্রিকেট খেলতে। ভ্রমণ পিপাসু রুবেল অবসরে বই পড়তে আর গান শুনতে ভালবাসে।
ঢাকা চক্ষু ইন্সটিটিউটে রিপন আলী : বিশ্বনাথ উপজেলা অলংকারী ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামে ১৯৯২ সালের ১৫ই অক্টোবর রিপন আলী’র জন্ম। তার পিতার নাম মো. আমির আলী ও মাতার নাম মোছা. মায়ারুন নেছা। রিপন আলী ২০০৮ সালে বিশ্বনাথ রামসুন্দ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি’তে জিপিএ-৪.৬৯ পেয়ে সিলেট স্কলার্সহোম স্কুল এন্ড কলেজে ভর্তি হয় এবং সেখান থেকে ২০১০ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পায়। এরপর সিলেট জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়ে এমবিবিএস করে এবং বর্তমানে সে ঢাকায় ইসপাহানি ইসলামিয়া চক্ষু ইন্সটিটিউট-এ অধ্যয়নরত।
সিওমেকে মো. শামছুল হক নাঈম : বিশ্বনাথ উপজেলার বিশ্বনাথ ইউনিয়নের পশ্চিম শ্বাসরাম গ্রামে ১৯৯২ সালের ১লা নভেম্বর মো. শামছুল হক নাঈম’র জন্ম। তার পিতার নাম মো. নুরুল হক ও মাতার নাম মোছাঃ গুলনেহার বেগম। পেশায় তার বাবা একজন কৃষক এবং মা একজন গৃহিনী। ৫ বোনের ১মাত্র ভাই নাঈম বাবা মায়ের ৫ম সন্তান। হযরত ওমর ফারুক (রা.) একাডেমী ছাত্র নাঈম পিএসসি ও জেএসসি’তে জিপিএ-৫ না পেলেও ২০১০ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় ঠিকই সে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পায়। সে ২০১২ সালে সিলেট সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি’তে জিপিএ-৫ পেয়ে ছেলে বেলার স্বপ্ন পুরণে মেধার ভিত্তিতে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজে (সিওমেক) ভর্তি হয়। বর্তমানে সে এই কলেজে ইন্টার্নশিপ করতেছে। ভবিষ্যতে নাঈম নিউরো সার্জারী ও নিউরো মেডিসিনের উপর উচ্চতর ডিগ্রি নিতে আগ্রহী। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) তার প্রিয় ব্যক্তিত্ব ও আদর্শ। ভ্রমণ পিপাসু নাঈম ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান ও ভারতের শিলং ও চেরাপুঞ্জি ঘুরেছে। তার প্রিয় খেলা ক্রিকেট ও ক্যারাম। এছাড়া নাঈম ড্রাইভিং করতে জানে ও কম্পিউটার চালাতে জানে। আর অবসর সময়ে ঘুরাঘুরি, খেলাধূলা, ফুল ও ফলের বাগান পরিচর্যা করতে ভালবাসে সে।
সিওমেকে আব্দুর রব : বিশ্বনাথ উপজেলার বিশ্বনাথ ইউনিয়নের মিরেরচর গ্রামে ১৯৯৩ সালের ১০ আগষ্ট আব্দুর রব’র জন্ম। তার পিতার নাম হাজী ইসমাইল আলী ও মাতার নাম শেফালী বেগম। পেশায় তার বাবা একজন কৃষিজীবী এবং মা একজন গৃহিনী। সে বাবা মায়ের কনিষ্ঠ সন্তান। হযরত ওমর ফারুক (রা.) একাডেমীর ছাত্র আব্দুর রব ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পায় এবং ২০১৩ সিলেট জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি’তে জিপিএ-৫ পেয়ে বাবা মায়ের স্বপ্ন পুরণ করতে এবং মানব সেবার ইচ্ছে নিয়ে জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। বর্তমানে সে ওই মেডিকেলে ইন্টার্নশিপ করতেছে। আব্দুর রব ভবিষ্যতে শিশু রোগ এর উপর উচ্চতর ডিগ্রি নিতে আগ্রহী। তার প্রিয় ব্যক্তিত্ব বাবা-মা। প্রিয় খেলা ফুটবল ও ক্রিকেট। খেলাধুলা করতে তার ভাল লাগে এবং অবসর সময়ে বই পড়তে ভালবাসে আব্দুর রব।
সিলেট উইমেন্স মেডিকেলে নাবিলা ইসলাম খান : বিশ্বনাথ উপজেলা রামপাশা ইউনিয়নের শ্রীধরপুর গ্রামে ১৯৯৩ সালের ২৫শে অক্টোবর নাবিলা ইসলাম খান’র জন্ম। তার পিতা সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এডভোকেট নুরুল ইসলাম খান ও মাতা রেকশনা ইসলাম চৌধুরী পেশায় একজন গৃহিনী। মা-বাবা’র চতুর্থ সন্তান নাবিলা সিলেট আনন্দনিকেতন থেকে ২০০৯ সালে এসএসসি ও ২০১১ সালে এইচএসসি পাশ করে। এরপর মানবসেবার লক্ষ্যে সে সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। বর্তমানে সে ওই কলেজেই অধ্যয়নরত। ভবিষ্যতে মেডিসিন এর উপর উচ্চতর ডিগ্রি নিতে আগ্রহী নাবিলা ইসলাম খান।
নর্থ ইস্ট মেডিকেলে আমিনুর রহমান ইমন : বিশ্বনাথ উপজেলার বিশ্বনাথ ইউনিয়নের বাওয়ানপুর গ্রামে ১৯৯৪ সালের ১৬ই এপ্রিল মো. আমিনুর রহমান ইমন’র জন্ম। তার পিতার নাম মো. আব্দুর রহিম ও মাতার নাম মোছাঃ রাবিয়া বেগম। পেশায় তার বাবা একজন ব্যবসায়ী এবং মা একজন গৃহিনী।২ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে ইমন বাবা মায়ের ৩য় সন্তান। হযরত ওমর ফারুক (রা.) একাডেমী ছাত্র ইমন ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পায়। সে ২০১৩ সালে সিলেট এমসি কলেজ থেকে এইচএসসি’তে জিপিএ ৪.৪০ পেয়ে মানব সেবার ইচ্ছে নিয়ে সিলেটের নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। বর্তমানে সে এই কলেজে ইন্টার্নশিপ করতেছে। ভবিষ্যতে ইমন ইউরোলজির উপর উচ্চতর ডিগ্রি নিতে আগ্রহী। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) তার প্রিয় ব্যক্তিত্ব ও আদর্শ। তার প্রিয় খেলা ফুটবল। আর অবসরে বই পড়া ও খেলাধুলা করতে ভালবাসে ইমন।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে কাওছার আহমদ : বিশ্বনাথ উপজেলার বিশ্বনাথ ইউনিয়নের কারিকোনা গ্রামে ১৯৯৪ সালের ২৯শে এপ্রিল কাওছার আহমদ’র জন্ম। তার পিতার নাম মো. তজম্মুল আলী ও মাতার নাম মোছাঃ রাজিয়া বেগম। পেশায় তার বাবা একজন সিএনজি চালক এবং মা একজন গৃহিনী। ৪ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে কাওছার বাবা মায়ের ১ম সন্তান। হযরত ওমর ফারুক (রা.) একাডেমী ছাত্র কাওছার পিএসসি ও জেএসসি’তে ভাল ফলাফল অর্জন করে এবং একই প্রতিষ্ঠান থেকে ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পায়। সে ২০১৩ সালে সিলেটের ইউনিভার্সেল কলেজ থেকে এইচএসসি’তে জিপিএ-৫ পেয়ে বাবা মায়ের স্বপ্ন পুরণ করতে এবং মানব সেবার ইচ্ছে নিয়ে ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। বর্তমানে সে ওই কলেজে এমবিবিএস ৫ম বর্ষে অধ্যয়নরত। ভবিষ্যতে কাওছার অর্থোপেডিক্স এর উপর উচ্চতর ডিগ্রি নিতে আগ্রহী। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) তার প্রিয় ব্যক্তিত্ব ও আদর্শ। তার প্রিয় খেলা ক্রিকেট। এছাড়া সে একজন ভাল ফুটবল ও ক্রিকেট খেলোয়াড়। আর অবসরে বই পড়তে ভালবাসে কাওছার।
পটুয়াখালী মেডিকেলে সজল কান্তি তালুকদার : বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের পুরান বাজার এলাকায় ১৯৯৫ সালের ১৪ই আগস্ট সজল কান্তি তালুকদার’র জন্ম। তার পিতার নাম ক্ষিতিশ রঞ্জন তালুকদার ও মাতার নাম আরতী রাণী তালুকদার। পেশায় তার বাবা একজন ব্যবসায়ী ও মা শিক্ষিকা। সজল কান্তি তালুকদার বিশ্বনাথের রামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পায় এবং ২০১৪ সালে সিলেটের জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করে। সে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পুরণ করতে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। বর্তমানে সে ওই কলেজে এমবিবিএস ৫ম বর্ষে অধ্যয়নরত। মা-বাবা’র দ্বিতীয় সন্তান সজল ভবিষ্যতে মেডিসিন এর উপর উচ্চতর ডিগ্রি নিতে আগ্রহী।
সিওমেকে নাভিদ মাহমুদ খান : বিশ্বনাথ উপজেলা দশঘর ইউনিয়নের নাচুনী গ্রামে ১৯৯৭ সালের ২০শে জুলাই নাভিদ মাহমুদ খান’র জন্ম। তার পিতার নাম ডাঃ মোহাম্মদ শিবলী খান ও মাতার নাম শাহানা চৌধুরী। পেশায় তার বাবা একজন চিকিৎসক ও লিডিং ইউনিভার্সিটিতে ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক হেলথ্ এ সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত এবং মা গৃহিনী। বাবা-মা’র প্রথম সন্তান নাভিদ মাহমুদ খান সিলেট স্কলার্সহোম স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ২০১০ সালে জেএসসি, ২০১৩ সালে এসএসসি ও একই প্রতিষ্ঠান থেকে ২০১৫ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ লাভ করে এবং পিতার মতো চিকিৎসক হতে সে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। বর্তমানের ওই মেডিকেল কলেজে সে ৪র্থ বর্ষে অধ্যয়নরত। মেডিকেলের ১ম প্রফেশনাল এমবিবিএস পরীক্ষায় সম্মিলিত মেধা তালিকায় ২য় স্থান এবং ২য় প্রফেশনাল এমবিবিএস পরীক্ষায় ১ম স্থান অর্জন করে নাভিদ মাহমুদ খান।
দিনাজপুর মেডিকেলে জাহেদ মুস্তাকিম : বিশ্বনাথ উপজেলার বিশ্বনাথ ইউনিয়নের জানাইয়া নোয়াগাঁও গ্রামে ১৯৯৬ সালের ২০শে আগস্ট জাহেদ মুস্তাকিম’র জন্ম। তার পিতার নাম মো. মোশাহিদ আলী ও মাতার নাম জাহিরুন নেছা। পেশায় তার বাবা একজন প্রবাসী ও মা গৃহিনী। জাহেদ মুস্তাকিম রামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পায় এবং ২০১৪ সালে সিলেট সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করে। সে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পুরণ ও মানবসেবা করার লক্ষ্যে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। বর্তমানে সে ওই কলেজে এমবিবিএস ৪র্থ বর্ষে অধ্যয়নরত। ভবিষ্যতে জাহেদ নিউরোসার্জারি’র উপর উচ্চতর ডিগ্রি নিতে আগ্রহী। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) তার প্রিয় ব্যক্তিত্ব ও আদর্শ।
ফরিদপুর মেডিকেলে মাহবুবুর রহমান কাওছার : বিশ্বনাথ উপজেলা বিশ্বনাথ ইউনিয়নের ভোগশাইল গ্রামে ১৯৯৬ সালের ৪ ডিসেম্বর মো. মাহবুবুর রহমান কাওছার’র জন্ম। তার পিতার নাম মুক্তার আহমদ ও মাতার নাম মোছা মিনারা বেগম। পেশায় তার বাবা একজন ব্যবসায়ী ও মা গৃহিনী। মাহবুবুর রহমান কাওছার বিশ্বনাথের রামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পায় এবং ২০১৭ সালে সিলেট এমসি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করে সে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। বর্তমানে সে ওই কলেজে এমবিবিএস ৩য় বর্ষে অধ্যয়নরত। তার প্রিয় ব্যক্তিত্ব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কাওছার ভবিষ্যতে কার্ডিওলজি’র উপর উচ্চতর ডিগ্রি নিতে আগ্রহী।
পাবনা মেডিকেল কলেজে নাসির উদ্দিন খাঁন : বিশ্বনাথ উপজেলার অলংকারী ইউনিয়নের টেংরা গ্রামে ১৯৯৮ সালের ২৫শে নভেম্বর নাসির উদ্দিন খাঁন’র জন্ম। তার পিতার নাম মরহুম গোলাব খাঁন ও মাতার নাম নূরজাহান বেগম। দক্ষিণ সুরমা উপজেলার হযরত আলী (রা.) একাডেমী থেকে নাসির ২০১৩ সালে জেএসসি ও ২০১৬ সালে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পায় এবং ২০১৮ সালে সিলেট এমসি কলেজ থেকে এইচএসসি’তে জিপিএ ৪.৯২ পেয়ে মানব সেবার লক্ষ্যে ও পিতা-মাতার স্বপ্ন পুরণে সে পাবনা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। সে বর্তমানে ওই মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) তার প্রিয় ব্যক্তিত্ব ও আদর্শ। তার প্রিয় খেলা ফুটবল ও ক্রিকেট। আর অবসরে বই পড়তে ভালবাসে নাসির।
সিওমেকে নাহিয়ান আহমদ মুক্তা : বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের তবলপুর গ্রামে ১৯৯৯ সালের ১ নভেম্বর নাহিয়ান আহমদ মুক্তা’র জন্ম। তার পিতার নাম ফরিদ আহমদ ও মাতার নাম খালেদা পারভীন। তার বাবা সৌদিআরব প্রবাসী এবং মা একজন গৃহিনী। সে বাবা মায়ের ষষ্ঠ সন্তান। নাহিয়ান ২০১৫ সালে সিলেট শাহপরান (রহ.) উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এস.এস.সি’তে এবং ২০১৭ সালে সিলেট শাহী ঈদগাহস্থ স্কলার্স হোম থেকে এইচ.এস.সি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়। এরপর জাতীয় মেধাতালিকার ভিত্তিতে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে (সিওমেক) এমবিবিএস বর্ষে ভর্তি হয়। বর্তমানে সে ওই কলেজে এমবিবিএস ২য় বর্ষে অধ্যয়নরত। সে ভবিষ্যতে একজন ভাল চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করতে চায়। নাহিয়ান আহমদ মুক্তা’র প্রিয় ব্যক্তিত্ব বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। তার প্রিয় খেলা ক্রিকেট। বিভিন্ন দেশের মুদ্রা সংগ্রহ করতে তার ভাল লাগে।
সিওমেকে মারজানা বেগম : বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামে ১৯৯৯ সালের ৭ই ডিসেম্বর মারজানা বেগম’র জন্ম। তার পিতার নাম মো. জহুর আলী ও মাতার নাম দিলারা বেগম। তার বাবা দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন এবং মা একজন গৃহিনী। সে বাবা মায়ের ষষ্ঠ সন্তান। মারজানা ২০১৩ সালে উত্তর বিশ্বনাথ দ্বি-পাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি’তে জিপিএ-৫, ২০১৬ সালে সিলেট বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি’তে জিপিএ-৫ ও ২০১৮ সালে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে জিপিএ ৪.৮৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। মারজানা চিকিৎসক হয়ে মানবতার সেবা করার লক্ষ্য নিয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। সে বর্তমানে ওই মেডিকেল কলেজে ডেন্টাল বিভাগে প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত। তার প্রিয় ব্যক্তিত্ব হযরত মুহাম্মদ (সা.)। প্রিয় খেলা ক্রিকেট। মুভি দেখতে তার ভাল লাগে এবং অবসর সময়ে লেখালেখি করতে, গান গাইতে ও শুনতে এবং বই পড়তে ভালবাসে মারজানা। ইতিমধ্যে সে বিডি নিউজ ২৪ এর শিশু সাংবাদিক নির্বাচিত হয়েছিল।
সিওমেকে হানজালা আল জাবেদী : বিশ্বনাথ উপজেলার অলংকারী ইউনিয়নের বেতসান্দি গ্রামের হানজালা আল জাবেদী। সে দেশের সেরা চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ মোঃ জহিরুল ইসলাম ও ডাঃ শরীফুন্নেছা চৌধুরী দম্পতির পুুুত্র। হানজালা আল জাবেদী ২০১৩ সালে জেএসসি’তে ট্যালেন্টপুল বৃত্তি ও ২০১৬ সালে এসএসসিতেও গোল্ডেন জিপিএ-৫ লাভ করেন। ২০১৮ সালে উচ্চ মাধ্যমকি পরীক্ষায় ঢাকার নটরডেম কলজে থেকে অংশগ্রহন করে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পায়। এরপর বাবার মতো মানবদরদী ও আদর্শ চিকিৎসক হওয়া স্বপ্ন নিয়ে সে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে (সিওমেক) ভর্তি হয়। বর্তমানে সে ওই কলেজে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত। হানজালার নানা অধ্যাপক ডাঃ নূরুল আম্বিয়া চৌধুরী ছিলেন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও নর্থ ইষ্ট মেডিকেল কলেজ’র অবঃপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।
আমরা প্রত্যেকের জন্য দোয়া চাই, যাতে তারা সবাই মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন আলোকিত মানুষ হয়ে তাদের পিতা-মাতা এবং ঐতিহ্যবাহী এই জনপদের সুনাম বৃদ্ধি করতে পারে।