AM-ACCOUNTANCY-SERVICES-BBB

বিশ্বনাথে দু’পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশ-ইউপি মেম্বার-মহিলাসহ আহত ১২ : আটক ৪

বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: মে - ২৮ - ২০১৯ | ১: ২০ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বনাথনিউজ২৪ :: সিলেটের বিশ্বনাথে বাড়ির সীমানা নিয়ে চলমান বিরুদের জের ধরে পুলিশের উপস্থিতি দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৭ মে) উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের কিশোরপুর গ্রামের সফিক উদ্দিন ও পঞ্চায়েত পক্ষের মধ্যে এঘটনা ঘটে। এতে পুলিশ, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও মহিলা’সহ অন্তত ১২জন আহত হয়েছেন। এসময় পুলিশ সহ একটি পক্ষ প্রতিপক্ষের একজনের বসত ঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর-লুঠপাট ও মহিলাদের উপর লাঠিচার্জের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহতরা হলেন- পঞ্চায়েত পক্ষের মৃত মনোহর আলীর পুত্র ইরন মিয়া (৪০), আশির মিয়ার পুত্র ইমন মিয়া (১৮), সফিক আলীর পুত্র আতিকুর রহমান (১৯), মৃত আব্বাস আলীর পুত্র আব্দুল মজিদ (৫০), আপ্তাব আলীর স্ত্রী আয়না বিবি (৫০), সফিক উদ্দিন পক্ষের তার পুত্র সাইফ উদ্দিন (২৯), রুবেল উদ্দিন (২৭), মৃত সামছুদ্দিনের পুত্র জমির উদ্দিন (৩৫), মৃত আব্দুল জলিলের পুত্র সুহেল মিয়া (৩২), মৃত সিরাজ উদ্দিনের পুত্র জামাল উদ্দিন (৪৫), স্থানীয় ইউপি সদস্য আমির উদ্দিন (৪০) ও থানা পুলিশের কনস্টেবল মামুন। গুরুত্বর আহতরা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, এঘটনায় ৪ জনকে আটক করেছে থানা পুলিশ। আটককৃতরা হলেন- কিশোরপুর গ্রামের আপ্তাব আলী, জুয়েল মিয়া, জিয়া উদ্দিন, শশুর বাড়িতে বেড়াতে আসা একই ইউনিয়নের কান্দিগ্রাম আলা মিয়া।
প্রত্যেক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, কিশোরপুর গ্রামের মৃত মৌলভী মফিজ উদ্দিনের পুত্র জিয়া উদ্দিন ও তার প্রতিবেশী মৃত সমশের আলীর পুত্র সফিক উদ্দিনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এর জের ধরে প্রায় ১৫ দিন পূর্বে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পর গ্রামবাসী বিষয়টি আপোস-মিমাংশা করার উদ্যোগ গ্রহন করেন। এজন্য উভয় পক্ষকে টাকা আনামতির জন্য গ্রামের মুরব্বিরা বললে এতে জিয়া উদ্দিন পক্ষের লোকজন সম্মতি জানালেও সফিক উদ্দিন পক্ষ টাকা আনামতি দিয়ে বিচার বৈঠকে বসতে সম্মত হননি। ফলে জিয়া উদ্দিনের পক্ষে অবস্থান নেন গ্রামবাসী। একপর্যায়ে গত রোববার রাতে পঞ্চায়েতের বৈঠকে সিন্ধান্ত হয় সাইফ উদ্দিন পক্ষের লোকজন গ্রামের রাস্তা রাস্তা দিয়ে চলাচল ও পঞ্চায়েতি কোন কর্মকান্ডে তাদেরকে সামিল না করার। পঞ্চায়েতের এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার সকালে সাইফ উদ্দিন পক্ষের লোকজনকে গ্রামের রাস্তা দিয়ে চলাচল না করতে বলেন আব্দুল মজিদ, আব্দুল গফুর, সাবুল মিয়া’সহ গ্রামের মুরব্বিরা। কিন্ত পঞ্চায়েতের বাঁধা-নিষেধ অমান্য করে গ্রামের রাস্তা ব্যবহার করে জোহরের নামাজ পড়তে মসজিদে সোমবার (২৭ মে) দুপুর সাড়ে ১২ টায় সাইফ উদ্দিন বাড়ি থেকে বের হয়ে তাকে বাঁধা প্রদান করেন পঞ্চায়েত পক্ষের লোকজন। এক পর্যায়ে রাষ্ট্রীয় জরুরী সেবার ৯৯৯ নাম্বারে কল করেন সাইফ উদ্দিন পক্ষের জামাল উদ্দিন। ৯৯৯ নাম্বারে কল যাওয়ার পর সেখান থেকে থানা পুলিশের কাছে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশনা আসলে বিশ্বনাথ থানার এসআই রসুল হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এবং সাইফ উদ্দিন পক্ষের লোকজনকে সাথে নিয়ে সরেজমিন বিষয়টি তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের উপস্থিতিতেই দু’পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে চুরিকাঘাতে পঞ্চায়েত পক্ষের ৪ জন ও থানা পুলিশের কনস্টেবল মামুন, স্থানীয় ইউপি সদস্য আমির উদ্দিন সহ উভয় পক্ষের ১১ জন আহত হন। ঘটনার খবর পেয়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাটিচার্জ করলে পঞ্চায়েত পক্ষের আপ্তাব আলীর স্ত্রী আয়না বিবি আহত হন। এসময় পঞ্চায়েত পক্ষের আপ্তাব আলী, সফিক মিয়া ও মনোহর আলীর বসত ঘরে হামলা, ভাংচুর ও স্বর্ণালংকার লুটপাটের অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্থরা। ঘটনার পর পঞ্চায়েত পক্ষের আপ্তাব আলী, জুয়েল মিয়া, জিয়া উদ্দিন ও গ্রামের আত্মীয় আলা মিয়াকে আটক করে থানা পুলিশ। তবে
বিশ্বনাথ থানার এসআই রসুল হোসেন বলেন, ৯৯৯ থেকে আমাদের কাছে কল আসলে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগকারী জামাল উদ্দিনের কাছে বিষয়টি জেনে তাদেরকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়ার পথিমধ্যে জিয়া উদ্দিন গংরা আমাদের উপর হামলা করে।
চার জনকে আটকের সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানায় অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

আরো সংবাদ