AM-ACCOUNTANCY-SERVICES-BBB

ভূমধ্যসাগরে মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফেরা বিশ্বনাথের মাছুম এখন তিউনিসিয়ায়

বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: মে - ১৯ - ২০১৯ | ৮: ২২ অপরাহ্ণ

এমদাদুর রহমান মিলাদ :: সম্প্রতি লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে তিউনিসিয়ার উপকূলবর্তী ভূমধ্যসাগরে অভিবাসী যাত্রীবাহী নৌকাডুবিতে যে কয়েকজন প্রাণে বেঁচে গেছেন তাদের একজন বাংলাদেশী যুবক মাছুম মিয়া (২৮)। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের পালেরচক গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের পুত্র মাছুম মিয়া বর্তমানে তিউনিসিয়ার এক উপকূলীয় শহরে রেড ক্রিসেন্টের একটি আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
গত ১১ মে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে তিউনিসিয়ার উপকূলবর্তী ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে প্রায় ৫৭ জন পানিতে ডুবে মারা যায়। এ সময় ১৬ জনকে সেখান থেকে জীবিত উদ্ধার করে জেলেরা। মাছুম মিয়া সেই সৌভাগ্যবানদের একজন। ওই নৌকাডুবিতে কেবল বিশ্বনাথ উপজেলার ৪জন যুবক নিখোঁজ হন। তাদের মধ্যে একমাত্র মাছুমের সন্ধান মিলেছে।
৩০ বছর বয়সী মাছুম মিয়া উন্নত জীবনের আশায় লিবিয়া হয়ে ইউরোপের পথে পাড়ি জমিয়েছিলেন দালালদের মাধ্যমে। এজন্য বিশ্বনাথের মানব পাচারকারী দালাল রফিকুল ইসলাম রফিকের হাতে তুলে দেন ৮লাখ টাকা। এরপর গত বছরের নভেম্বর মাসে লিবিয়ায় পাড়ি জমান মাছুম। সেখানে যাওয়ার পর অন্যান্য যুবকদের সাথে তাকেও ‘গেম ঘর’ নামক একটি তালাবদ্ধ ঘরে বন্ধি করে রাখা হয়। দীর্ঘ ৪মাস সেখানে বন্ধি থাকার পর গত ১১ মে ইতালি পাঠানোর জন্য মাছুম ও তার সঙ্গিদেরকে একটি বড় স্টীলের নৌকায় করে লিবিয়া থেকে তিউনিসিয়ার উপকূলবর্তী ভূমধ্যসাগরে নিয়ে যায় দালালরা। এসময় গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে দালালরা অভিবাসীদেরকে একটি ছোট নৌকায় উঠতে বলে। ফলে দু’দিকেই মরণের ভয় দেখে সামান্য বাঁচার আসায় তারা নৌকায় উঠতে বাধ্য হন। এই ছোট নৌকাটি সাথে সাথে ডুবে যেতে শুরু করে। নৌকাডুবিতে প্রায় ৬০ জনের মতো পানিতে ডুবে মারা যায় ও মাছুম সহ ১৬ জন যুবক সারারাত ধরে সাঁতার কেটে সাগরে ভেসে থাকেন। এরপর সেখান থেকে তাদেরকে জীবিত উদ্ধার করে জেলেরা।
মাছুম মিয়ার ছোট ভাই মাসুদ আহমদ বিশ্বনাথ নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম’কে জানান- নৌকাডুবির ঘটনার পর আমার বড় ভাই মাছুম মিয়ার জন্য আমরা খুবই দুঃশ্চিন্তায় ছিলাম। ঘটনার তিন দিন পর হঠাৎ করে তিনি (মাছুম) মোবাইল ফোনে আমাদের কাছে ভয়েস রেকর্ড পাঠান। এতে আমরা কিছুটা দুঃশ্চিন্তামুক্ত হই। সর্বশেষ গত শনিবার মাছুমের সঙ্গে তার ফোনে কথা হয়েছে বলে জানান মাসুদ। বর্তমানে তিউনিসিয়ার এক উপকূলীয় শহরে রেড ক্রিসেন্টের একটি আশ্রয় কেন্দ্রে মাছুম রয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

আরো সংবাদ