AM-ACCOUNTANCY-SERVICES-BBB

বিশ্বনাথে স্ত্রী-কন্যাকে জিম্মি করে প্রবাস ফেরত ব্যক্তির পরিবারকে হয়রানির অভিযোগ

বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: এপ্রিল - ৫ - ২০১৯ | ১০: ৫২ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বনাথনিউজ২৪ ডেস্ক :: বিদেশে রোজগার শেষে দেশে ফিরে দেখলেন দেশে পাঠানো অর্থকড়ি নেই। এখন স্ত্রী-কন্যাকে আটকে রেখে প্রতিপক্ষের লোকজন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। একের পর এক হামলা করে ভাই-ভাতিজাদেরকে বাড়িছাড়া করার চেষ্টা করছে একটি চিহ্নিত অপরাধীচক্র। এদের হুমকি-ভয়ভীতিতে ভীতসন্ত্রস্ত বিশ্বনাথ উপজেলার নোয়াগাঁও পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. ইদ্রিছ আলী। বৃহস্পতিবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন অভিযোগ করেন। এই পরিস্থতি সিলেটের পুলিশ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহায়তা চেয়েছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইদ্রিছ আলী বলেন, ১৫/১৬ বছর সৌদি আরবে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে ২০০৯ সালে দেশে আসেন। এই দীর্ঘ সময়ে স্ত্রী রীনা বেগমের কাছে মাসে মাসে টাকা পাঠাতেন। যার পরিমাণ প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা। স্ত্রী টাকাপয়সা জমা না রেখে বিলাসিতায় খরচ করেন এবং তার নামে এককভাবে জমি কিনেন। সে সময় পাশের বাড়ির শফিক মিয়ার ছেলে ফাহিম নামের এক যুবককে ঘরে আসা-যাওয়ার সুযোগ করে দেন রীনা। যার ফলে তার ষোড়শি কন্যা নিলুফার ইয়াছমিনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে ফাহিম।

ইদ্রিছ আলী বলেন, আমার ভাতিজা স্থানীয় ইউপি সদস্য ইরণ মিয়াদের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল ফাহিমদের। সে বিরোদের জের ধরে ২০১৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ইরণ মিয়াসহ অন্যান্যরা আহত হন। এ ঘটনায় ইরণ মিয়ার বড় ভাই সোহাগ আহমদ চন্দন বাদী হয়ে বিশ্বনাথ থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন। সেই এজাহার হাতে রেখেই থানা পুলিশ ফাহিমের দায়ের করা আরেকটি এজাহার ২১ সেপ্টেম্বর তারিখে মামলা হিসেবে রুজু করে। যার নং ১৫। এবং সোহাগের দায়ের করা অভিযোগটি ২৩ সেপ্টেম্বর তারিখে মামলা হিসেবে রুজু করা হয়। যার নং ১৬। অত্যন্ত আশ্চর্যের বিষয় এ দুটি মামলা ২১ এবং ২৩ তারিখ রুজু করা হলেও আমার মেয়ে নিলুফার ইয়াছমিনকে বাদী করে বিশ্বনাথ থানায় ২০ সেপ্টেম্বর ইরণ মিয়াদের বিরুদ্ধে একটি নারী নির্যাতন মামলা রেকর্ড করা হয়। যার নং ১৪। দুরভিসন্ধিমূলক এ মামলা রেকর্ড হওয়ার পর বুঝতে পারি আমার স্ত্রী এবং কন্যা আমার নিয়ন্ত্রণে নেই। তারা ফাহিমদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। এজন্যই আমার ভাতিজাদের বিরুদ্ধে ফাহিমদের হয়ে মামলা করানো হয়েছে। সেই থেকে আজও আমি আমার স্ত্রী-কন্যাকে আমার ঘরে পাইনি। আমার আশঙ্কা তাদেরকে জিম্মি করে অবৈধ সম্পর্কের সূত্র ধরে আটকে রেখে আমাকে এবং আমার ভাতিজাদেরকে ভিটে ছাড়া করার ফন্দি আটছে। তারই অংশ হিসেবে আমার মেয়ে নিলুফার ইয়াছমিনকে দিয়ে গত ২৭ মার্চ আরও একটি মিথ্যা মামলায় আমার ভাতিজাদের আসামি করা হয়। যার নং ১৩। মামলার এজাহারে যা উল্লেখ করা হয়েছে তা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।

তিনি বলেন, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ফাহিম তার নিকট আত্মীয় ফখরুলসহ কয়েকজন সন্ত্রাসী আমার ভাতিজা ইরণ মিয়াদের উপর হামলা চালিয়ে আহত করে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা পেয়ে এ ব্যাপারে পরদিন মামলা রুজু করে। যার নং ১১। এই মামলায় জামিন নিয়েই গত ১৫ মার্চ আবারও আমার ভাতিজা ইরণ মিয়া মেম্বার, সোহাগ আহমদ চন্দন ও তোতা মিয়ার উপর সশস্ত্র হামলা চালায় ফাহিম ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা। রক্তাক্ত অবস্থায় সোহাগ এবং তোতা মিয়াকে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তোতা মিয়া এখনো হাসপাতালে জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায়ও আমার ভাতিজা সোহাগ আহমদ চন্দন বাদী হয়ে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করে। যার নং ০৮।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ফাহিমরা সব সময় সশস্ত্র অবস্থায় এলাকায় চলাফেরা করে। এদের কাছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র আছে। এরা পেশাদার অপরাধী। ২০১০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ফাহিমের ভাই ফখরুল প্রচুর পরিমাণ জাল টাকাসহ গ্রেপ্তার হয়। এছাড়া ফাহিম ২০১৪ সালের ২৯ মে বিশ্বনাথে ছাতকের এক ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাত করে ৫০ হাজার টাকা ছিনতাই করে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে নানা অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে থানায়। তারা আমার স্ত্রী রীনা বেগমের কাছে থাকা সমুদয় টাকা আত্মসাত করেছে। তাদেরকে আটকে রেখে নির্যাতন চালাচ্ছে, আর তাদের পক্ষে বিভিন্ন মামলায় ব্যবহার করছে। প্রশাসনের কাছেও তারা বারবার আশ্রয় পাচ্ছে। ফলে একের পর এক ঘটনা ঘটানোর সাহস পাচ্ছে। এই সন্ত্রাসীদের কবল থেকে আমার স্ত্রী-কন্যাকে উদ্ধার করে নিরাপত্তা হেফাজতে নিয়ে তাদের জীবন এবং আমার ও আমার ভাতিজাদের জীবন রক্ষার স্বার্থে আসল রহস্য উদঘাটনের জন্য পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।

আরো সংবাদ