AM-ACCOUNTANCY-SERVICES-BBB

বিশ্বনাথে উত্তেজনার মধ্যদিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পক্ষের পৃথক সভা

বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: নভেম্বর - ২৭ - ২০১৫ | ৭: ৫১ অপরাহ্ণ

P1050225

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বিশ্বনাথে উপজেলা পরিষদের মাসিক সম্বনয় সভায় হামলা ও উপজেলা চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় শুক্রবার টান টান উত্তেজনার মধ্যদিয়ে পৃথক প্রতিবাদ সভা করেছে দুটি পক্ষ। শুক্রবার উপজেলা সদরের সর্বত্র চরম উত্তেজনা বিরাজমান ছিল। অজানা আতংঙ্কে নতুন ও পুরান বাজার এলাকার বেশির ভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই বন্ধ ছিল। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যে পড়েছে ভাটা ও যানবাহন চলাচলও ছিল কম। সকাল থেকে উপজেলা সদরের গুরত্বপূর্ণ পয়েন্টে থানা পুলিশের অবস্থান ছিল লক্ষণীয়। এদিকে, উপজেলা পরিষদের সম্বনয় সভায় হামলা ও দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো থানায় কোন মামলা দায়ের করা হয়নি বলে জানা যায়।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপি নেতা সুহেল আহমদ চৌধুরীর উপর হামলার প্রতিবাদের শুক্রবার বিকেল ৩টায় উপজেলা সদরের কলেজ রোডস্থ কারিকোনায় উপজেলাবাসীর ব্যানারে সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং একই সময়ে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপি নেতা আহমেদ-নুর উদ্দিন ও জানাইয়া গ্রামবাসী নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে উপজেলা সদরের নতুন বাজারস্থ লাইটেস ষ্ট্যান্ডে জানাইয়া গ্রামবাসীর উদ্যোগে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাইয়া গ্রামকে নিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরীর গ্রাম কারিকোনাসহ তাঁর পক্ষের অনুসারীদের করা কুটুক্তির প্রতিবাদে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন গ্রামের প্রবীন মুরব্বী হাজী নোয়াব আলী মেম্বার। স্থানীয় ইউপি মেম্বার নূরুল হকের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও জানাইয়া গ্রামের বাসিন্দা আহমেদ-নুর উদ্দিন, গ্রামের মুরব্বী হাজী মবশ্বির আলী, আয়না মিয়া, হাজী জমসেদ আলী, ময়না মিয়া, মকদ্দছ আলী।
সভায় বক্তারা বলেন, ভবিষ্যতে জানাইয়া গ্রামকে নিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বা তাঁর অনুসারীরা কোন কটুক্তি করলে সাথে সাথে এর উচিত জবাব দেওয়া হবে বলে হুসিয়ারী উল্লেখ করে এব্যাপারে তাঁদের সতর্ক থাকার আহবান করেন। পাশাপাশি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ-নুর উদ্দিন বলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আমাকে (নুর) হত্যা করার জন্য কোটি টাকার বাজেট করেছেন। আমি বিশ্বনাথবাসীকে বিষয়টি জানিয়ে রাখলাম। উপজেলাবাসীর সম্পদ আমি (নুর) তাঁকে (লুটপাঠ) করে খেতে দিব না। প্রয়োজনে মৃত্যুবরণ করতে আমি রাজি আছি।
এদিকে, উপজেলা চেয়ারম্যানের উপর হামলার প্রতিবাদে উপজেলাবাসীর ব্যানারে বীরমুক্তিযোদ্ধা তৈয়ব আলীর সভাপতিত্বে ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি মোতাহের আলীর পরিচালনায় আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও অলংকারী ইউপি চেয়ারম্যান লিলু মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহ আসাদুজ্জামান আসাদ, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হাজী আবদুল হাই, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের আহবায়ক সৈয়দ রাজ্জাক আলী, বৃক্ষপ্রেমিক আব্দুল গফ্ফার উমরা মিয়া, পুরান বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মনির হোসেন, প্রবাসী তসিল খান, আব্দুর রব, মাসিক বিশ্বনাথ ডাইজেস্ট সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জুবায়ের, বিএনপি নেতা আসাদুজামান নূর আসাদ, ইউপি সদস্য ডাক্তার আছাব উদ্দিন আছকির, উপজেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মোমিন মামুন, উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক ফয়জুল ইসলাম জয়, উপজেলা ছাত্রনেতা আলাল আহমদ, জামাল হোসেন, লিটন শিকদার, ফজলুর রহমান।
সভায় বক্তারা বলেছেন, শক্তহাতে এখন থেকে সন্ত্রাসীদের দমন করতে হবে। এভাবে বসে থাকা যাবেনা। ৭দিনের মধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন না করলে আগামী শুক্রবার রামসুন্দর অগ্রগামী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে কটোর কর্মসূচি ঘোষনা করা হবে।
প্রসঙ্গত, ‘টিআর-কাবিখা-এডিপি’ প্রকল্প রেজুলেশনে ‘অন্তর্ভূক্তি ও বাতিল’ করা নিয়ে উপজেলা পরিষদের সম্বন্বয় কমিটির সভায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপি নেতা সুহেল আহমদ চৌধুরী এবং ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপি নেতা আহমেদ-নুর উদ্দিনের মধ্যে বাগবিতন্ডা-হাতাহাতি ও হামলার ঘটনা এবং জানাইয়া গ্রামবাসীকে নিয়ে কটুক্তির জের ধরে বৃহস্পতিবার বিকেলে দুই পক্ষের মধ্যে একাধিক বার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। হামলা ও ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরীসহ অর্ধ শতাধিক লোক আহত হন। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ হন ৩জন।

আরো সংবাদ