বিশ্বনাথে সম্বনয় সভায় উপজেলা চেয়ারম্যানের উপর হামলা : দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত ৫০,পুলিশের গুলি
বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: নভেম্বর - ২৬ - ২০১৫ | ৭: ১৭ অপরাহ্ণ
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পক্ষের নিজাম উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। অন্যান্য আহতদের মধ্যে চেয়ারম্যান পক্ষের জয়নালসহ অন্তত ১০ জন ও ভাইস-চেয়ারম্যান পক্ষের আহতরা হলেন- শাহিন, ওয়াসিম, জুনাব আলী, রুমেল, সাজন, জিতু, লিটন, সমর, খালিক অন্যান্য আহতদের নাম জানা যায়নি।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বেলা ২টায় উপজেলা পরিষদের মাসিক সম্বনয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় পরিষদের সদস্যদের মধ্যে এলাকার উন্নয়ন বন্টন নিয়ে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়। সভায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরী তার বক্তব্যে পেশ করতে থাকলে বক্তব্যে ওপর আপত্তি করেন উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান আহমদ-নূর-উদ্দিন। এসময় হঠাৎ কয়েকজন যুবক পরিষদের হল রুমে প্রবেশ করে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় উপজেলা চেয়ারম্যানের উপর। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরী ও অলংকারী ইউপি চেয়ারম্যান লিলু মিয়াসহ অন্তত ৫জন আহত হন। এরপর উপজেলা চেয়ারম্যানকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
এদিকে, বিকলে ৪টায় চেয়ারম্যানের উপর হামলার প্রতিবাদে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল করা হয় উপজেলা সদরে। মিছিলে বিএনপি অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী অংশগ্রহন করেন। মিছিলটি উপজেলা পরষদের সামন থেকে শুরু হয়ে নতুন বাজারস্থ গোলচত্তরে এসে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জানাইয়া গ্রামবাসীকে নিয়ে কটুক্তিমূলক বিভিন্ন শ্লোগান দেন চেয়ারম্যানের অনুসারীরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন জানাইয়া গ্রামবাসী। ফলে সভা শেষে মিছিলটি পুরান বাজারের দিকে বাসিয়া ব্রীজের দক্ষিণ পাড়ে চলে গেলে পিছন দিক থেকে মিছিলটিকে ধাওয়া করেন জানাইয়া গ্রামবাসী। এসময় ভাইস চেয়ারম্যানের পক্ষ নিয়ে জানাইয়া গ্রামবাসী ও চেয়ারম্যানের পক্ষ নিয়ে কারিকোনাসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় জড়িয়ে পড়েন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে পুলিশ অনেক চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে সরে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে প্রায় আধা ঘন্টা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ইট পাটকেলের আঘাতে পথচারীসহ উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশাতধিক লোক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ শর্টগানের ১১ রাউন্ড গুলি করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে।
এব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরী বলেন, পরিষদের সভা চলাকালিন সময়ে ভাইস-চেয়ারম্যান আহমদ নূর উদ্দিনের নেতৃত্বে কয়েকজন সন্ত্রাসী অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে সভায় হামলা চালায়।
ভাইস-চেয়ারম্যান আহমদ নূর উদ্দিন বলেন, উপজেলার কোনো প্রকল্প আমাদের (ভাইস চেয়ারম্যানদের) দেয়া হয়নি। সকল প্রকল্প উপজেলা চেয়ারম্যান আত্বাসাৎ করেন। আজ (বৃহস্পতিবার) পরিষদের সভায় আমরা প্রতিবাদ জানাই। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যানের অনুসারীদের মধ্যে হট্রগুল শুরু হয়। তবে চেয়ারম্যানের ওপর কে বা কাহারা হামলা করেছে তা আমার জানা নেই। তিনি বলেন, উপজেলা সদরে মিছিল ও সভা করে আমাদের জানাইয়া গ্রামবাসীকে কটুক্তি করা হলে আমরা তাদেরকে প্রতিহত করি।
থানার অফিসার ইন-চার্জ মো. রফিকুল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শর্টগানের ১১ রাউন্ড গুলি নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আসাদুল হক বলেন, সম্বনয় সভায় অনাকাংখিত ঘটনা দুঃখজনক। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।
এদিকে, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ওপর হামলার প্রতিবাদে তাক্ষনিক এলাকাবাসীর মিছিল শেষে প্রতিবাদ সভায় বক্তরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ওপর হামলাকারীদের অভিলম্ভে গ্রেফতার করে দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।