AM-ACCOUNTANCY-SERVICES-BBB

বিশ্বনাথে সবজির বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: নভেম্বর - ১৯ - ২০১৫ | ১: ২২ অপরাহ্ণ

৩৬০০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ

1234

এমদাদুর রহমান মিলাদ ও নূর উদ্দিন :: বিশ্বনাথ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সবজি চাষ হয়েছে। এবারও টমেটোসহ সবজির বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এবছর বিশ্বনাথ উপজেলায় ৩ হাজার ৬ শত হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এপর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সবজি চাষ হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে।
চাষকৃত সবজির মধ্যে রয়েছে টমেটো, লাউ, বেগুন, শাষা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মূলা, ফরাস, মিষ্টি কুমড়া, আলু, লালশাক, শীম, কাঁচা মরিছ ইত্যাদি। প্রতিবছর চাষকৃত এসব সবজি ট্রাক, ভেনসহ বিভিন্ন যানবাহনে বোঁঝাই করে সিলেট নগরীর বিভিন্ন আড়ৎ ও দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। এসব সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন অনেকেই। এলাকার অনেক সফল সবজি চাষী রয়েছেন যাদের সবজি চাষে সাফল্য চমকে দেয়ার মতো।
সরজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এ বছর ব্যাপকভাবে সবজি চাষ করা হয়েছে। উপজেলার হরিপুর, খালপাড়, রামপুর, মাধবপুর, রহিমপুর, তবলপুর, সোনাপুর, মুফতির বাজার, মুছেধর, রামাইরচক, তালিবপুর, তেলিকুনা, বিলপাড়র, অলংকারী বিভিন্ন স্থানে শত শত একর জমিতে সেপ্টেম্বর মাসের শুরু থেকেই শুরু হয়েছে সবজি চাষ। এক সময় এসব এলাকা আলু চাষের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। কিন্ত তাতে মন্দা দেখা দেওয়ায় এখন তারা টমেটো, লাউসহ বিভিন্ন সবজি চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। শুধু হরিপুর গ্রামের প্রায় ৫০ জন কৃষক অন্তত ১০০ একর জমিতে সবজি চাষ করেছেন। এর মধ্যে শুধু টমেটো চাষ করা হয়েছে প্রায় ৭০ একর জমিতে। এছাড়া চাষকৃত সবজির মাঝে রয়েছে বেগুণ, ফুলকপি, বাধাঁকপি, ওলকপি, শালগম, ফরাশ, মূলা, লালশাক, শষা, কাঁচা মরিছ ইত্যাদি।
সবজি চাষিদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, একটি টমেটো গাছে সর্বমোট ৪০/৫০ টাকা খরছ হয়। আর প্রতি টমেটো গাছ থেকে পাওয়া যায় ১৫/২০ কেজি টমেটো। ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে টমেটু বিক্রি শুরু করতে পারবেন বলে অনেক কৃষক জানান। মৌসুমের শুরুতে সবজি বিক্রি শুরু করতে পারলে খরচ পুষিয়ে গত বছরের চেয়েও বেশী টাকা আয় করা সম্ভব বলে মনে করছেন চাষিরা। ইতিমধ্যে টমেটু ছাড়া অন্যান্য সবজি বিক্রি শুরু করেছেন কৃষকরা।
চাষকৃত এসব সবজি প্রতিদিন ট্রাক বোঁঝাই করে স্থানীয় বিভিন্ন স্পট থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপতানী করা হয় ও সিলেট নগরীর বিভিন্ন আড়ৎ এ পাইকারী দরে বিক্রি হয়। অনেক সময় পাইকারী ব্যবসায়ীরা টাটকা সবজি কিনতে সরাসরি ক্ষেতে চলে যান। স্থানীয় বাজারে এ সবজির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। কীটনাশকমুক্ত ও সার কম থাকায় সিলেটের বাইরের সবজি থেকে স্থানীয় এ সবজি সুস্বাদু।
উপজেলার শাহজিরগাঁও গ্রামের মকবুল আলী জানান, পাঁচ একর জমিতে শিম চাষবাদ করতে তার ব্যয় হয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকা। এখন প্রতিদিন এক-দেড় মণ শিম বাজারে এনে বিক্রি করেন। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি শিম বিক্রি করেছেন ৭০ টাকা করে। কিন্তু বাজারে শিমের দাম কমে যাওয়ায় রোববার প্রতি কেজি শিম ৫০ টাকা দামে বিক্রি করছেন বলে জানান। এ পর্যন্ত তিনি ২০ হাজার টাকার শিম বিক্রির করেছেন এবং আরও প্রায় চার লক্ষ টাকার শিম বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি জানান।
হোসেনপুর গ্রামের মুস্তাক আহমদ মস্তফা বলেন, আমাদের এলাকায় প্রতি বছর প্রচুর সবজি চাষাবাদ হয়ে থাকে। প্রতিদিন স্থানীয় মুফতির বাজারে সবজি চাষিরা সবজি এনে বিক্রি করেন। তবে মুফতির বাজার সড়কের বেহাল দশা থাকায় এলাকাবাসী চরম দূর্ভোগ পুহাতে হচ্ছে।
এব্যপারে উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আলীনূর রহমান বলেন, এবার বিশ্বনাথে ব্যাপক সবজি চাষ চলেছে। এতে কৃষকদেরও আগ্রহের কমতি নেই। আমরা সব সময় মাঠে গিয়ে তদারকি করছি। উপজেলার খাজাঞ্চী ও অলংকারী ইউনিয়ন সবিজি চাষের জন্য বিখ্যাত। তিনি বলেন, উপজেলায় এবছর প্রায় ৩ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষাবাদ করার জন্য নির্ধারণ করা হয়। প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে শীত কালিন সবজি চাষাবাদ হয়ে গেছে। এতে ভালন ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে হয়েছে বলে তিনি জানান।

আরো সংবাদ