সিলেট : কিডনি থেকে পাথর অপসারণ করে ইউরিনারি ব্লাডারে প্লাস্টিকের পাইপ রেখে অপরারেশন সম্পন্ন করার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার ভূক্তভোগী সিলেটের ওসমানীনগর থানার বেগমপুর এলাকার নুরপুর গ্রামের রোগীনি পিয়ারা বেগমের স্বামী আবদুল মোছাব্বির বাদি হয়ে নগরীর স্টেডিয়াম মার্কেটের ৩১ নং চেম্বারের ডাঃ রফিকুস সালেহীন (৬০)’র বিরুদ্ধে সিলেটের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন। সদর দরখাস্ত মামলার নং-৮১৬/২০১৪।
আদালতের ম্যাজিস্ট্রট মোঃ সাহেদুল করিম শুনানী শেষে মামলাটি আমলে নিয়ে ফৌজদারী দন্ডবিধির ৩৩৮ ধারায় আসামী ডাঃ রফিকুস সালেহীনের বিরুদ্ধে সমন জারি করে আগামী ৮ সপ্তাহের মধ্যে আসামী ডাঃ রফিকুস সালেহীন উক্ত আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানান গেছে, আবদুল মোছাব্বির গত ২৭ জুন সিলেট নগরীর রিকাবীবাজারস্থ মেট্রোপলিটন হাসপাতালে তার স্ত্রী পিয়ারা বেগমের কিডনি থেকে পাথর অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচার করেন ডাঃ রফিকুস সালেহীন। অস্ত্রোপচারের পর ৩০ জুন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হলেও অপারেশনস্থলে তার স্ত্রী প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করেন। পরে বিষয়টি ডাঃ সালেহীনকে অবগত করলে তিনি অতিরিক্ত কিছু ঔষধ লিখে দেন। তাতেও ব্যথা না কমায় ৫ জুলাই আবারও স্ত্রীকে নিয়ে তার শরণাপন্ন হন আবদুল মোছাব্বির। ওইদিনও তিনি ব্যথা কমার কিছু ঔষধ লিখে দেন। রোগিনী পিয়ারা বেগমের অবস্থার আরোও অবনতি ঘটলে ১৩ জুলাই তিনি স্ত্রীকে নিয়ে আবারও ডাঃ সালেহীনের কাছে আসেন। সালেহীন ওইদিন কিছু টেস্ট লিখে দেন। টেস্টের রিপোর্ট নিয়ে ১৫ জুলাই সিলেট স্টেডিয়াম মার্কেটস্থ চেম্বারে গেলে ডাঃ সালেহীন জানান, রোগীনির ইউরিনারি ব্লাডারে টিউমার হয়েছে। দ্রুত অপারেশন করাতে হবে এবং ডাক্তার সালেহীন এ সময় পূর্ণরায় অপারেশন বাবদ রোগীনির স্বামীর কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবী করেন এবং তাকে জীবন নাশের হুমকী দিয়ে মারাত্মক অপরাধ সংঘটন করেন।
পরে আবদুল মোছাব্বির ১৯ জুলাই ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শফিকুল ইসলাম লিয়নের সাথে যোগাযোগ করেন। তিনি কিছু টেস্ট করানোর পরামর্শ দেন। ওই টেস্টের রিপোর্টে আগের অপারেশনের সময় ইউরিনারি ব্লাডারে প্লাষ্টিকের পাইপ রেখে দেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। পরে ২৩ জুলাই রাতে রোগীনি পিয়ারা বেগমের অপারেশন করে পাইপটি অপসারণ করা হয়।
মামলায় বাদি পক্ষের আইনজীবী আনোয়ার হোসেন ও ময়নুল ইসলাম জানান, বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। তাই চিকিৎসকের সামান্য অবহেলার কারণে ওই রোগীর মৃত্যুও হতে পারত। তাই আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়েছেন।