AM-ACCOUNTANCY-SERVICES-BBB

বিদ্যুতের ভেলকিবাজীতে অতিষ্ঠ বিশ্বনাথবাসী, বিক্ষোব্ধ গ্রাহকরা

বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: জুলাই - ৫ - ২০১৪ | ১২: ৩৪ পূর্বাহ্ণ

Pic

এমদাদুর রহমান মিলাদ :

পল্লী বিদ্যুতের অব্যাহত ভেলকিবাজী ও মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে অতিষ্ট বিশ্বনাথ উপজেলাবাসী। রমজান মাসের শুরু থেকে চলছে অতিরিক্ত লোডশেডিং। ফলে অনেক কষ্ঠ পোহাতে হচ্ছে রোজাদার মানুষজনকে।

তেমনি স্কুল-কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ায়ও ঘটছে বিঘœ। এদিকে, বিদ্যুতের যন্ত্রনায় নিয়মিত বিশ্বকাপের খেলা দেখতে না পারায় ক্ষোভ বিরাজ করছে ক্রিড়া প্রেমীদের মনেও। এভাবে বিদ্যুতের লোডসেডিং চলতে থাকলে যে কোন সময়ে বিক্ষোব্ধ হয়ে উঠতে পারেন বিশ্বনাথের গ্রাহকরা। বিক্ষোব্ধ গ্রাহকরা জানিয়েছেন, বিদ্যুতের ভেলকিবাজী বন্ধ না হলে তারা শ্রীঘই  আন্দোলনে যাবেন।
আগের চাইতে বিদ্যুতের এই লোডশেডিং বেড়ে গেছে আরো কয়েকগুন। রমজান মাস শুরু হওয়া থেকে প্রতিদিন ২৪ ঘন্টার মধ্যে গড়ে ৭/৮ ঘন্টা করে বিদু্যুৎ পান বিশ্বনাথ উপজেলাবাসী। ইফতারের পূর্বে, তারাবির নামাজের সময় ও সেহরির সময়ে বিদ্যুৎ চলে যায়। এছাড়া বিশ্বকাপের খেলা শুরুর পূর্বেই বিদ্যুৎ চলে যায়। বিশেষ করে রাতের বেলা বিদ্যুৎ বঞ্চিত থাকতে হয় বিশ্বনাথবাসীকে। রাতে বিদ্যুৎ দিয়ে ২-৫ মিনিট পর আবারো চলে যায়। প্রতিদিন রাতে কমপক্ষে ১০০ বার এই ভেলকিবাজীর স্বীকার হতে হয় গ্রাহকদেরকে। বিদ্যুতের জন্য মারাতœক সমস্যায় পড়তে হয় এ উপজেলায় কর্তব্যরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্টনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকদেরকেও।
বিশ্বনাথ প্রবাসী অধ্যুষিত উপজেলা হওয়াতে প্রতি বছর দেশে বেড়াতে আসেন বিপুল সংখ্যক প্রবাসীরা। কিন্তু বিদ্যুতের এহেন যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ হয়ে যাওয়ার সময় প্রায় বেশির ভাগ প্রবাসীই বলতে বাধ্য হন “আর দেশে না আসার কথা”। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদেরকে নিয়েই বেশি সমস্যায় পড়তে হয় প্রবাসীদেরকে।
দেশে বিনিয়োগ করার চিন্তা নিয়ে অনেক প্রবাসী দেশে আসলেও বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারনে সেই চিন্তাভাবনা মুহুর্তেই মাথা থেকে হারিয়ে ফেলেন। যে কারনে উপজেলার গড়ে উঠছে না ছোট-বড় কোন কলকারখানা। অথচ কলকারখানা স্থাপন হলে উপজেলার বেকার সমস্যা অনেকাংশেই কমে যেত। আর সরকারও পেত বিপুল পরিমান রাজস্ব।
প্রতিদিন উপজেলা বিভিন্ন এলাকা থেকে এই প্রতিবেদকের কাছে লোডসেডিং এর স্বীকার অনেক গ্রাহকরা ফোন করে তাদের অভিযোগের কথা বলেন। গ্রাহকরা অভিযোগ করেন, এলাকায় ১ ঘন্টা বিদ্যুৎ দিলে তার পরবর্তী ৩ ঘন্টা আর নেই। লোডশেডিংয়ের নামে পল¬¬ী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তারা ইচ্ছে করেই উপজেলাবাসীকে কষ্ঠের মধ্যে রাখেন। যাতে করে বিশ্বনাথ উপজেলার মানুষজন শান্তিতে বাস করতে না পারে। লোডশেডিংয়ের কারণে এমনিতেই ব্যবসা বানিজ্য ঠিক মত করতে পারছেন ব্যবসায়ীরা। রমজান মাসেও মসজিদে আযান কিংবা ইফতারের সময় হলেই বিদ্যুৎ চলে যায়।
দেশে আসা অনেক প্রবাসী জানান, তারা দেশে এসেছেন একটু শান্তিতে কয়েকটা দিন কাটাবেন বলে। কিন্তু এখানে আসার পর তাদের অশান্তিটা যেন আরো বেড়ে গেছে। দেশে এসে লোডশেডিংয়ের কারনে পরিবার পরিজনদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।
সমুজ আহমদ, তজম্মুল আলী, আবুল কাশেম, বশির মিয়াসহ অনেক গ্রাহকরা বলেন, ভেবেছিলা রমজান মাসটা অন্তত শান্তিতে থাকতে পারবো। কিন্ত তা আর আমাদের কপালে নেই। বিদ্যুাতের ভেলকিবাজীতে মনে হয় চিরদিনের জন্য ঘরের লাইনগুলো ছিরে ফেলি।
বিক্ষোব্ধ ক্রীড়া প্রেমী জামাল উদ্দিন, ফখরুল ইসলাম বলেন, ৫ বছর পর একটি বিশ্বকাপ খেলা হয়। আমরা আশা করেছিলাম সুন্দরভাবে শান্তিতে এই খেলাটি উপভোগ করতে পারবো। কিন্ত বিদ্যুতের যন্ত্রনায় নিয়মিত খেলা দেখতে পারছি না। এসময় তারা বিদ্যুতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতিও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ বিশ্বনাথ জোনাল অফিসের ডিজিএম আলম হোসেন বলেন, বিশ্বনাথে বিদ্যুতের চাহিদা হচ্ছে সাড়ে ৫ মেঘাওয়াট। এর মধ্যে আমরা পাই মাত্র আড়াই মেঘাওয়াট। যার কারণে বিদ্যুতের লোডশেডিং তো থাকবেই। দেশের সরকার যদি বিদ্যুৎ উৎপাদন না বাড়ায় তাহলে বিদ্যুতের লোডশেডিং কমবে কি করে? তীব্র লোডসেডিং এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৩৩ কেবি লাইনে সমস্যা থাকার কারণে এই অবস্থা। তবে দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ চলছে বলে তিনি জানান।

আরো সংবাদ