AM-ACCOUNTANCY-SERVICES-BBB

ব্রাজিলে মৌলভীবাজারের যুবক খুন : পরিবারে চলছে শোকের মাতম

বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: জুলাই - ৩ - ২০১৪ | ২: ৫১ অপরাহ্ণ

9242-300x273

বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডেক্স : ব্রাজিলে অজ্ঞাত আততায়ীর হাতে খুন হয়েছেন মৌলভীবাজারের যুবক জাহেদ আহমদ (২৮)। তিনি বড়লেখা উপজেলার সুড়িকান্দি গ্রামের টিলা বাড়ির আব্দুল হক ও রহিমা বেগমের ছেলে। জুলাইল সে দেশের হাসপাতাল থেকে লাশ গ্রহণ করে সেখানেই তাকে সমাহিত করা হয়েছে। সাওপাওলো থেকে ৭১১ কিলোমিটার দক্ষিণে প্যারাগুয়ের কাছে পারানা রাজ্যের রাজধানী সিয়া নর্থের কুজেরিয় গ্রামে তিনি খুন হন।

জানা গেছে, গত ২৮ জুন সন্ধ্যায় বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি তিনি। পরে স্থানীয় হাসপাতালের মর্গে পাওয়া যায় জাহেদের লাশ। পরিত্যক্ত এক বাড়ি থেকে পুলিশ তার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় বলে স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশীরা জানান। জাহেদের মৃত্যুর খবরে তার পরিবারে চলছে শোকের মাতম। জাহেদের মা-বাবা বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। তাদের সান্তনা দিতে পারছেন না কেউ।

নিহতের পরিবার ও প্রবাসীরা জানিয়েছেন, গত ১ জুলাই জাহেদের লাশ হাসপাতাল থেকে গ্রহন করেন প্রবাসী বাংলাদেশী বড়লেখা উপজেলার শাহবাজপুরের বিহাইডর গ্রামের ছাদেক আহমদ। পরে ওই দিন পারানা রাজ্যের লনড্রিনায় জানাজা শেষে স্থানীয় একটি মসজিদের পাশে তার লাশ দাফন করা হয়। এ ঘটনায় আতংক দেখা দিয়েছে ব্রাজিলে বসবাসরত বাংলাদেশীদের মধ্যে।

নিহতের পরিবার সুত্রে জানা গেছে, বছরখানেক আগে জীবিকার সন্ধানে প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ করে ব্রাজিল পাড়ি জমান জাহেদ। ব্রাজিলে যাবার প্রায় ৪ মাস পর তিনি বৈধভাবে কাজ করার একটি কার্ড পান। সেখানে তিনি একটি পোল্ট্রি ফার্মে কাজ করতেন। গত ২৭ জুন শুক্রবার বাড়িতে মায়ের সাথে ফোনে শেষ কথা হয় তার। এ সময় মায়ের শারীরিক বিষয়ে খোঁজ খবর নেন এবং মাকে চিকিৎসা করানোর জন্য ভাইদের বলেন। রমজান উপলক্ষে বাড়িতে টাকা পাঠাবেন বলেও নিহত জায়েদ তার পরিবারকে জানান। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে জাহেদ তৃতীয়। জাহেদের মা রহিমা বেগম জানান, ‘ঘটনার একদনি আগে ২৭ জুন জাহেদের সাথে মোবাইল ফোনে আমার কথা হয়েছে। সে আমার চিকিৎসা ও রমজানের খরচের জন্য টাকা পাঠাবে বলে বলেছিল। কিন্তু আমার ছেলে আর কোনদিন টাকা পাঠাবে না, আমাকে আর মা বলে ডাকবে না। আমি বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করে দোষীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।’

ব্রাজিলে বসবাসরত প্রবাসীরা জানান, গত ২৮ জুন বাসা থেকে বের হয়ে জাহেদ আর ফিরে আসেনি। পরে সাওপাওলো থেকে ৭১১ কিলোমিটার দক্ষিণে প্যারাগুয়ের কাছে পারানা রাজ্যের রাজধানী সিয়া নর্থের কুজেরিয় গ্রামের একটি পরিত্যক্ত এক বাড়িতে তার লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয় ব্রাজিলের বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ রক্তাক্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু কি কারনে জাহেদ খুন হয়েছেন সে বিষয়টি সঠিক ভাবে কেউ বলতে পারছে না। তবে জানাজায় উপস্থিত একটি সুত্র জানায়, তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। ধারনা করা হচ্ছে তাকে হয়তো শ্বাস রোধে হত্যা করা হয়েছে। আর অন্য একটি সুত্র জানায়, তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে জাহেদ নিহতের পরদিন একই জায়গায় সিলেটের গোলাপগঞ্জের সোহেল নামের এক যুবক ছিনতাইকারীর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে বর্তমানে হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।

ব্রাজিলে বসবাসরত বাংলাদেশীদের একটি সুত্র জানায়, ২৫-২৬ বছর আগে ব্রাজিলে বাংলাদেশীদের আগমন শুরু। বর্তমানে হাজার সাতেক বাংলাদেশীর বসবাস ল্যাটিনের এই সবচেয়ে বড় দেশে। অতীতে বেশ কিছু সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছিলেন প্রবাসীরা। আহত হয়েছেন অনেকেই। তবে খুনের ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু সেই দুঃখজনক ঘটনাই ঘটল ২৮ জুন রাতে। বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা আবুল হাশেম জানান, ব্রাজিলে বাংলাদেশী যুবক খুন হওয়ার কোন তথ্য তিনি পাননি।

আরো সংবাদ