দুই অন্ধ মেয়েকে নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে কাঁটছে বৃদ্ধা রুপজান বিবি’র জীবন
বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: জুলাই - ৩ - ২০১৪ | ২: ০১ অপরাহ্ণ
রুপজান বিবি। বয়স ৮০ বছর। স্বামী মৃত কদ্দুছ আলী। দারিদ্রের কষাঘাতে পেটভরে খেতে পারেন না কখনো। তবোও এক মুঠো খাবারের সন্ধানে প্রতিদিন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ভিক্ষাবৃত্তি করে বেড়াতে হয় তাকে। এর পরও এখনো তিনি কোন ভাতা পাননি।
এ বিধবার বাড়ি বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের খাজাঞ্চীগাঁও গ্রামে। রুপজান বিবি ২ জমজ কন্যা সন্তানের জননী। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধের সময়ে মৃত্যুবরণ করেন তার স্বামী। ২ মেয়েই অন্ধ হওয়ায় তাদের বিয়ে দেওয়াও সম্ভব হয়নি রুপজান বিবি’র। কোন ছেলে সন্তান না থাকায় অভাব-অনটনের মধ্যে জীবন চালাতে হচ্ছে তাকে। র্দীঘ জীবনের শেষ প্রান্তে এস শরীর আর চলছে না। তবুও জীবনের তাগিদে সংগ্রাম করে চলছেন। এ হতদরিদ্র মহিলা প্রতিদিন বিভিন্ন গ্রামে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ভিক্ষার ঝুঁলি নিয়ে হাঁটতে থাকেন। স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি মাটি কাজ আবার কখনো অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন। এখন শুধু ভিক্ষার ঝঁলি নিয়ে হাটা ছাড়া আর কোন কাজ তিনি করতে পারেন না। চোখে ঝাপসা দেখেন। ঠিকভাবে চলতে পারেন না। বর্তমানে দুই অন্ধ সন্তানকে নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে কাটছে তার জীবন।
রুপজান বিবি জানান, তার বিয়ের পর ১৯৬৮ সালে আফিয়া ও পরতিঙ্গা নামে জমজ দুই কন্যা সন্তান তাদের ঘরে জন্ম নেন। তার স্বামী কদ্দুছ আলী সিলেটের রেলগেইট এলাকায় কাঁচা মালের (সবজি) ব্যবসা করতেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের কোন এক সময়ে সিলেট শহর থেকে বাড়ি ফেরার পথে পাক হানাদার বাহিনীর গুলিতে কদ্দুছ আলী মারা যান। এরপর থেকে রুপজান বিবি অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়েন। তবুও কাজকর্ম করে সন্তানদের নিয়ে কোন রকম জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। তিনি জানান, তার অন্ধ দুই মেয়েকে নিয়ে প্রায় ৪ বছর পূর্বে কেল্লা শাহর মাজারে গিয়েছিলেন। এ সময় ঐ মাজারের খাদিম তার মেয়েদেরকে ১২টি মাস অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত রোজা রাখার পরামর্শ দেন। এরপর থেকে তার মেয়েরা রোজা রেখে আসছে। রুপজান বিবির অভিযোগ, তাকে এখনো বয়স্ক কিংবা বিধনা কোন ভাতাই দেওয়া হয়নি। এমনকি ভিজিডি ভিজিএফ কোন কিছুই তিনি পাননি।