AM-ACCOUNTANCY-SERVICES-BBB

গরীবের আবার ইফতার!

বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: জুলাই - ১১ - ২০১৪ | ৯: ০৭ অপরাহ্ণ

index

মোহাম্মদ আলী শিপন : নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে তিন বেলা খাবার কেনাই কষ্টকর! ভালো জিনিস কেনার সাধ্য তো আমাদের নেই। ফুটপাত থেকে যা কিনতে পারি, তাতেই আমাদের আনন্দ। কি দিয়ে ইফতার করছেন প্রশ্ন করতেই এভাবে আক্ষেপ ঝড়ে পড়ে রিকশা চালক আবুল মিয়ার কণ্ঠে। তার বাড়ি নেত্রকোনা জেলায়। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে সিলেটের বিশ্বনাথের রজকপুর গ্রামে বসবাস করছেন।
তার মতে,অসংখ্য শ্রমজীবি মানুষ প্রতিদিন ইফতার করেন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে। সামান্য মুড়ি.ছোলা,পিয়াজু আর পানিই তাদের ভরসা। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেশ কয়েকজন শ্রমজীবি মানুষের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, কষ্ট হলেও ২০ থেকে ৩০ টাকা ব্যয় করেন ইফতার কিনতে। তবে যেদিন আয় ভালো হয়, সেদিন ইফতারের আইটেমের সংখ্যাও বেড়ে যায়। অবশ্য সেটা সব সময় নয়, কালে-ভদ্রে। তা না হলে রোজ রোজ একই ধরণের আইটেম দিয়ে ইফতার করেন এসব শ্রমজীবি মানুষ। তারা ইফতার সামগ্রী কেনার ক্ষেত্রে প্রতিদিন আয়ের ওপর নির্ভর করেন। তাদের এক মাত্র ভরসা ফুটপাতের ইফতারের দোকান গুলো। বেশির ভাগ সময় মুড়ি,ছোলা,পিয়াজু দিয়েই ইফতার করেন তারা। শরবত বা খেজুর দিয়ে ইফতার করা তাদের পক্ষে প্রায় দিনই সম্ভব হয় না। অনেকে আবার ইফতারি কেনার সার্মথ্য না থাকায় ভিড় জমান বিভিন্ন মসজিদে।
উপজেলা সদরের বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়, ইফতার সামগ্রীর মূল্য গতবারের তুলনায় এবার অনেক চড়া। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রভাব পড়েছে ইফতারের বাজারেও। প্রতিদিনের আয়ের ওপর নির্ভর করে যাদের জীবিকা নিরবাহ করতে হয় বা হচ্ছে তাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ইফতার সামগ্রী কেনা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ফুটপাতের ইফতারের দোকান থেকে ২০-৩০ টাকার ইফতার কিনেই তাদের সন্তুুষ্ট থাকতে হচ্ছে।
শুক্রবার উপজেলার বিশ্বনাথ-রামপাশা রোডের একটি রিক্সা গেরেজে মাগরিবের আযানের ১০ মিনিট আগে ৫/৬ জন রিকশাা চালক ও ভ্যান চালক গোল হয়ে বসেছেন। তাদের কাছে গিয়ে বোঝা গেলো তারা মুড়ির সঙ্গে ছোলা ও পিয়াজু মেশাচ্ছেন। কিন্তু মুড়ি মধ্যে ছোলা বা পিয়াজু খুজে পাওয়াই কষ্টকর। কি দিয়ে ইফতার করছেন জানতে চাইলে রিকশাা চালক মনির মিয়া বলেন, দেখতেই পারছেন মুড়ি,ছোলা ও পিয়াজু দিয়ে। এতে ব্যয় হয়েছে একশত টাকা। বেগুন বা আলুর চপ কিনতে গেলে আরো বেশি টাকার দরকার। কোথায় পাবো রোজা রেখে বেশি পরিশ্রম করাও যায় না। যতটুকু আয় করি তা থেকে কিছু ইফতার কিনতে ব্যয় করি।
তারা জানান, সামনে ঈদ। স্ত্রী সন্তানদের জন্য তো কিছু নতুন কাপড়-চোপর কিনতে হবে। ভাল খাবার দিয়ে ইফতার করলে ঈদের বাজার করব কি কেমনে।
উপজেলা সদরের পুরান বাজার ফুটপাত দোকানে ইফতার বিক্রি করেন কামাল মিয়া। তিনি জানান, আমরা সস্তা দামে ইফতার বিক্রিয় করে থাকি। আইটেমের মধ্যে রয়েছে, ছোলা, ফোলাব, বেগুনি ও মুড়ি। নিন্ম আয়ের মানুষ আমাদের কাছ থেকে ইফতার সামগ্রী ক্রয় করে থাকেন। কেউ কিনেন ৩০ টাকার আবার কেউ কিনে ৪০ টাকার।
ভ্যান গাড়ি চালক জলিল, কাবুল মিয়া জানান, প্রতিনিয়ত জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। ঠিক মতো তিন বেলা খাবারই জোটাতে পারি না। আবার ইফতার। তার পরেও পানি বা মুড়ি দিয়ে কোন রকমে ইফতার করতে হয়। আমরা অসহায়। মনে নানা স্বপ্ন উকি দিলেও অর্থাভাবে অনেক সাধই পূরণ করা সম্ভব হয় না।

আরো সংবাদ