AM-ACCOUNTANCY-SERVICES-BBB

খুন হওয়ার আগেই আশংকা করেছিলেন জিলু !

বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: জুলাই - ৬ - ২০১৪ | ৫: ০১ অপরাহ্ণ

jilu2

রফিকুল ইসলাম কামাল, সিলেট : গত ২৭ জুন, শুক্রবার সন্ধ্যার পর সিলেট নগরীর পাঠানটুলা এলাকায় মহানগর ছাত্রদল নেতা ও গোবিন্ধগঞ্জ কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জিল্লূল হক জিলুকে কুপিয়ে খুন করে মহানগর ছাত্রদলেরই আরেকটি গ্রুপ। তবে খুন হওয়ার আগেই নিজের জীবন নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছিলেন জিল্লূল হক জিলু। তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের একাধিক স্ট্যাটাসে বেরিয়ে এসেছে এমনই চমকপ্রদ তথ্য। ফেসবুক স্ট্যাটাসে কারা তার প্রতিদ্বন্দ্বী ও কারা তাকে খুন করতে পারে-সেই ইঙ্গিত দিয়ে গেছেন তিনি।

নিহত জিল্লুল হক জিলু তার একান্ত নিজস্ব ফেসবুক একাউন্টের স্ট্যাটাসে ‘মহানগর বিএনপির এক নেতা আমার (জিলুর) লাশ ফেলে দেবেন বলে হুমকি দিয়েছেন’ এমন কথা উল্লেখ করেছেন। ফেসবুক স্ট্যাটাসে আরো অনেক কথাই বলেছেন জিলু।

গত ১৯ মে জিল্লূল হক জিলু তার একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন,“আমার বিরুদ্ধে একটি কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্রু করছে। বিশেষ করে চিঁচকে চোরা পেশাদার মটরসাইকেল ছিনতাইকারী কাজী মেরাজ আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করছে। সে তার নিজের অতীত পর্যালোচনা না করে আমার বিরুদ্ধে লেগেছে। সে কতোবার ছিনতাই মামলায় জেল কেটেছে এবং কতোটা মটর সাইকেল ছিনতাই মামলা ছিল এবং বর্তমানে আছে। মদন মোহন কলেজের ভর্তি বাণিজ্যের টাকা জালিয়াতির ঘটনায় দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকা ধারাবাহিক খবর প্রকাশ করেছে। গত কিছুদিন আগে আম্বরখানা ৬ লাখ টাকা ছিনতাই করেছিল এই কাজী মেরাজ। ছিনতাই টাকার  বাগবাটোয়ারা নিয়ে তার ফোনালাপ রেকর্ড করা আসে। ফোন রেকর্ডিং মহানগর বিএনপি সভাপতি এম এ হক শুনে কাজী মেরাজকে দল থেকে বহিষ্কার করতে ছিলেন, তখন কার কার পায়ে ধরে ম্যানেজ করে ছিল। একটু জেনে নিবেন। তার কুকর্মের ডকমেন্টগুলো আমি বাধ্য হয়ে ম্যানেজ করেছি। এই কাজী মেরাজ বিভিন্ন ছিনতাইয়ের ঘটনায় পত্রিকায় শিরোনাম ছিল।……জানিনা ও কিসের জন্য আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আমাকে ওর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্ধী ভাবে, আমি তার প্রতিদ্বন্দ্বী হতে যাবো কেন? ও একা মানুষ, একা একা মাঝে মধ্যে মিছিলে যায় আবার যখন দলের দুঃসময় দেখে (তখন) দেশ থেকে পালায়……”।

এরপর গত ২৪ মে জিল্লূল হক জিলু তার অপর একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন,“..আমাকে নিয়ে একটি মহল বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে। ….ওই মহল আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নষ্টের উদ্দেশ্যে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ওরা ফেসবুকে রং (ভুয়া) আইডি দিয়ে এসব করছে। আমি কিছুদিন পূর্বে গ্রুপ চ্যাঞ্জ করায় অনেকের চক্ষুশূল হয়ে গেছি। মহানগর বিএনপির এক নেতা আমাকে হুমকি দয়ে খবর পাঠান- আমাকে অস্ত্র দিয়ে গ্রেফতার করাবেন, আমার লাশ ফেলে দেবেন।…… আমাকে নিয়ে যে নেতা ষড়যন্ত্র করছেন, এসব বন্ধ করুন। মামলা-হামলার ভয় দেখাবেন না। আমি ভেসে ভেসে এখানে আসিনি।….”।

গত ২৮ মে জিল্লুল হক জিলু তার ‘সুবিদবাজার অঞ্চলের সিলেট মহানগর বিএনপির এক নেতা এবং তার সাঙ্গপাঙ্গদের মিথ্যা অপপ্রচার, হুমকি এবং ষড়যন্ত্রে করণীয় কি? এই আলোকে আমার এ লিখা’ শিরোনামের ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন,“…….. কিছুদিন আগে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে আদর্শজনিত কারণে গ্রুপ পরিবর্তন করি। গ্রুপ পরিবর্তনের পর একটি মহলের চক্ষুশূল হয়ে গেছি। এরপর উল্লেখিত নেতা হুমকি দিয়ে খবর পাঠায় আমাকে অস্ত্র দিয়ে গ্রেফতার করাবেন। আমাকে মেরে নাকি লাশ গুম করে ফেলবেন।………… বন্ধুরা শুনেন আরেক কাপুরুষিত ষড়যন্ত্রের খবর ঃ কিছুদিন পূর্বে আমার এলাকা ছাতকের আনোয়ার হোসেন রাজু নামের একটি ছেলেকে কিছু লোক গনধোলাই দিয়ে মারাত্মক আহত করে। ঘটনার আগের দিন থেকেই আমি ঢাকায় ছিলাম, বাস্তবতা পর্যালোচনায় জানা যায়, আনোয়ার হুসেন রাজু বিসারেব (ইউনিপে টু ইউ) এর কোম্পানির একজন কর্মকর্তা ছিল। এই হায় হায় কোম্পানীর মাধ্যমে সে সাধারন সরলমনা মানুষের অনেক টাকা আত্মসাৎ করে। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী পাওনাদারেরা একজোট হয়ে তাকে গনধোলাই দিয়ে আহত করে। ঘটনার দিনে আমি ঢাকায় ছিলাম উপযোক্ত প্রমাণাদি থাকার পরও সেই নেতা প্রকৃত সত্যকে আড়াল করে আমাকে ১ নং আসামী করে মামলা প্রদান করে। আমি ঢাকায় থেকেও মামলার আসামী বিষয়টা কত হাস্যকর এবং নাজুক। শুধুমাত্র নেতার উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য আরো কতকিছু যে ঘঠতে পারে তা বেমালুম। হায়রে দেশের রাজনীতি! ছিঃ ছি ছিঃ!

 

শুনেন, মামলায় আমার নাম কি জানেন? জিল্লুল হক জিলু অরফে কালু জিলু অরফে ডাকাত জিলু। আকেরজনের নাম লিখেছে নুরুল অরফে ডাকাত নুরুল নামে। বিমানবন্দর থানায় আনোয়ার হুসেন রাজুর ছোট ভাই মনোয়ার হুসেন মঞ্জুকে বাদী করে থানায় এজহার পাঠায়। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে শেখ হাসিনার পুলিশ লীগ কর্মীরা মামলা নেয়। মামলায় মহানগর বিএনপি নেতার সাঙ্গপাঙ্গদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি ২ জন (আনোয়ার হুসেন রাজুর বন্ধু) (১) কামাল আহমদ (২) মফিজকে মামলার রাজ সাক্ষী করা হয়। আমাদেরকে ডাকাত উল্লেখ করে মামলা দিয়েছে, অথচ জানেন নেতার আশীর্বাদ পুষ্ট মামলার বাদী এবং সাক্ষীদের পরিচয়? মামলার বাদী মনোয়ার হুসেন মঞ্জু (আনোয়ার হুসেন রাজুর ছোট ভাই) বিমানবন্দর থানার ছিনতাই মামলার আসামী ছিল। আর মামলার রাজসাক্ষী কামাল আহমদের নামে কোতোয়ালী থানায় তিনের অধিক ছিনতাই মামলা ছিল। আর মফিজ অস্ত্র মামলায় সাজা প্রাপ্ত, দির্ঘদিন সাজাভোগের পর বের হয়ে ওই নেতার গুনদর কর্মী হয়েছে। মফিজের নামে কয়েকটি ছিনতাই মামলাও আছে।

শুনলেনতো নেতার সাঙ্গ পাঙ্গদের মধ্যে সর্বোত্তম তিনজনের কাহিনী। বাকিরা কেমন তা বুঝে নিন। তিনজনই ছিনতাই ও অস্ত্র মামলায় জেল খেটেছেন। প্রয়োজনে তাদের ছিনতাই মামলার কপিগুলো ও অস্ত্র মামলার সাজাভোগের কপি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করব। নেতার সাঙ্গ- পাঙ্গদের চরিত্র দেখেই বুঝা যায় নেতার চরিত্র কেমন।অথচ মামলার এজাহারে তারা আমাকে বলে ডাকাত। বিষয়টা এমন যে “ চোরের মায়ের বড় গলা”।

হায় হায় কোম্পানির মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎকারী আনোয়ার হুসেন রাজু’র উপর ভুক্তভুগী পাওনাদারেরা আইন নিজ হাতে তুলে নিয়ে যে হামলা করেছে তার তীব্র নিন্দা জানাই। পাশাপাশি হায় হায় কোম্পানির হাতে সহায়-সম্বলহীন ভুক্তভোগীদের সমস্যা সুরাহার জন্য মাননীয় অর্থমন্ত্রী মহুদয়কে অনুরোধ করছি। সাথে সাথে আমাকে নিয়ে কুচক্রবাহিনী যে ঘৃণ্য খেলায় লিপ্ত হয়েছেন তা বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় এই কুচক্রী বাহিনীর সকল কু-কর্মের বিরুদ্ধে লিখতে বাধ্য হবো।

আমাকে মামলা-হামলা আর ষড়যন্ত্রের ভয় দেখাবেন না। আমি কচুরিপানার মত ভেসে আসিনি যে ইচ্ছে হলেই আমাকে উপড়ে ফেলবেন। আগে আমি এবং আমার পারিবারিক ঐতিহ্য সম্পর্কে জানুন তারপর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হোন নতুবা হিতে বিপরীত হতে পারে।

আমার পরিবার আমাকে অভদ্রতা শেখায়নি। প্লিজ….প্লিজ আমাকে বাধ্য করবেন না।”

আরো সংবাদ