জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রন হলে এশিয়ার অর্থনৈতিক মডেল হবে বাংলাদেশ
বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: জুলাই - ৮ - ২০১৪ | ১০: ৩০ অপরাহ্ণ
এএইচএম ফিরোজ আলী
বাংলাদেশের আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যা অনেক বেশী। আমাদের ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫’শ ৭০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ দেশে লোকসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি। প্রতি বর্গ কিলোমিটারে বাস করছেন ১ হাজার ৮৪ জন লোক। অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এ অবস্থা মোটেই কাম্য নয়। জনসংখ্যা একটি পর্যায় পর্যন্ত অতি প্রয়োজনীয় জনশক্তি বা সম্পদ। প্রয়োজনের অতিরিক্ত জনসংখ্যা দেশ ও জাতীর উন্নয়নের প্রধান প্রতিবন্ধক। একথা সত্য যে, জনসংখ্যা বাংলাদেশের প্রধান ও অন্যতম সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে যেমন আলাদা মন্ত্রানালয় নেই, তেমনী সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও কর্মপন্থার যতেষ্ট অভাব রয়েছে। বিরোধীদল, সুশীল সমাজ, সচেতন মহল দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে তাদের কার্যকর কোন ভূমিকা চোখে পড়ছে না। দাতাসংস্থাদের সলা পরামর্শে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রন কার্যক্রম চলছে। দাতারা তাদের সুবিধা মত জনসংখ্যা বাড়ায় কমায় এবং নানা কর্মসূচী মাঠ পর্যায়ে চাপিয়ে দিয়ে থাকে। তারপরও শত বাঁধা, আপত্তি, প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে বাংলাদেশের পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচী আর্ন্তজাতিক মহলে মডেল হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রন কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশ এখন সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মাথাপিছু আয় বাড়ছে, রপ্তানি বাড়ছে এবং রেমিটেন্স বর্তমান ৬২ শতাংশে উন্নিত হয়েছে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রন কার্যক্রম চালু না থাকলে বাংলাদেশ এখন ভয়াবহ এক মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হত।
আমাদের দেশের আয়তন বা জমি বাড়ছে না। কিন্তু মানুষ বাড়ছে। মানুষ ভাড়ার কারনে সকল কৃষি জমিতে ঘর-বাড়ী তৈরি করা হচ্ছে। ফলে দেশের হাজার হাজার হেক্টর কৃষি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে আবাসন তৈরিতে। কৃষি জমি কমায় প্রতি বছর ২৫ লাখ টন খাদ্য ঘাটতি রয়েছে। বায়ূদূষন, মাটিদূষন, পানিদূষন, শব্দদূষন, বন-জঙ্গল উজাড়, খাল-বিল, নদী-নালা ভরাট এবং পাহাড়-পর্বত কেটে পরিবেশকে ধ্বংস করা হচ্ছে। আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি, ঘুষ-দূর্নীতি, সরকারী সম্পদ লুটে খাওয়ার আকাংখা সবই হচ্ছে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারনে। স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, লঞ্চ, ট্রেন, বিমান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, হাট-বাজার, শহর, গ্রাম সর্বত্র জনসভার মত মানুষ আর মানুষ। টঙ্গী থেকে নারায়নগঞ্জ পর্যন্ত রেল লাইনের দুই পার্শ্বের বস্তি, রাজধানী ঢাকা শহরের বস্তি, জেলা-উপজেলা পর্যায়ের বস্তি এবং দূর্গম এলাকার বাড়ী-ঘরে জনসংখ্যা দেখলে যে কোন লোকের ধারনা হবে- জনসংখ্যা এদেশের সম্পদ না আপদ। বস্তি এলাকা সহ দেশের দূর্গম এলাকার দম্পতিদের গড়ে ৫/৬টি করে সন্তান রয়েছে।
‘‘দুটি সন্তানের বেশি নয়, একটি হলে ভালো হয়’’ এটি পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের একটি শ্লোগান। এই শ্লোগানকে সামনে রেখে দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম চলছে। প্রত্যেক দম্পতি দুটি সন্তানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার জন্য এই শ্লোগান নিয়ে দম্পতিদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বিষয়টি বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু গত ১৮ই জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রীপরিষদের এক সভায় ‘‘একটি হলে ভালো হয়’’ এই বাক্যটি বাদ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পরামর্শ দিয়েছেন। অতিসম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী চীন সফর করে এসেছেন। সে দেশের প্রত্যেক দম্পতি এক সন্তানের অধিক সন্তান গ্রহন না করায় তাদের জন্মহার শূন্যের কোঠায় এসে পৌছেছে। এখন সরকার আবার নতুন প্রজন্মের জন্য সন্তান জন্মদানে জনগনকে উৎসাহিত করছে। সেখানে বর্তমানে তরুন প্রজন্মের অভাব রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হয়তো এই বিষয়টি লক্ষ্য করেছেন। জনসংখ্যার দিক দিয়ে বিশ্বের সর্ববৃহৎ এবং আয়তনের দিক দিয়ে পৃথিবীর ৩য় বৃহত্তম দেশ হচ্ছে চীন। তাদের লোকসংখ্যা ১৪০ কোটি এবং আয়তন ৯৫ লাখ ৯৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার। তাদের শিক্ষার হার শতকরা ৮৫ ভাগ এবং মাথাপিছু আয় ২৫ হাজার মার্কিন ডলার। চীন তাদের কৃষি জমি কোন মতেই নষ্ট করছে না। জাপানের লোকসংখ্যা মাত্র ১৩ কোটি এবং আয়তন ৩ লাখ ৭৮ হাজার কিলোমিটার। শিক্ষার হার শতকরা ১০০ ভাগ, মাথাপিছু আয় ৩৭ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার। স্বল্প সময়ের মালয়েশিয়া জনসংখ্যা স্থিতিশীল রাখার মাধ্যমে উন্নয়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এসব দেশ আগে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রনের সুদুর প্রসারী পরিকল্পনা গ্রহন করায় দেশের উন্নতি সাধিত হয়েছে। বাংলাদেশে ৬২ ভাগ, চীনে ৮৫ ভাগ, জাপানে ৫৪ ভাগ, মালয়েশিয়ায় ৪৯ ভাগ দম্পতি পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতির আওতায় রয়েছেন। বাংলাদেশের জনসংখ্যা গতি প্রকৃতি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ১৮৬০ সালে এ ভূখন্ডে জনসংখ্যা ছিল মাত্র ২ কোটি আর বর্তমানে জনসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারনে ঢাকা শহরকে বিশ্বের সাত নম্বর নিকৃষ্ট শহর বা মানুষ বসবাসের অনুপযোগী শহর হিসেবে তালিকা ভূক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ও একসময় এই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে পারে। জন্মের চেয়ে মৃত্যু বেশি হলে জনসংখ্যা হ্রাস পায়। জন্ম-মৃত্যু সমান হলে জনসংখ্যা স্থির থাকে। জন্ম থেকে মৃত্যু কম হলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এভাবেই জনসংখ্যার পরিবর্তন ঘটে। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ২৫ লাখ শিশু জন্মগ্রহন করছে এবং প্রায় ৬ লাখ লোকের মৃত্যু হয়। এই হিসাবে প্রতি বছর দেশে ১৯ লাখ লোক বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাংলাদেশের জন্যসংখ্যা কার্যক্রম শুরু হয় ৫০ দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে। ১৯৫৫ সালে কলকাতায় একটি ক্লিনিকে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম দেখিয়ে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইসকন্দর মির্জা, আমেরিকার সাহায্য আনতে সক্ষম হয়েছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম ১৯৭৬ সালে গ্রাম থেকে ৪র্থ ও ৫ম শ্রেনী পাশ করা মেয়েদের নিয়োগ দিয়ে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমের প্রচার শুরু করা হয়। এ সময় মেয়েদের চাকুরীতে যাওয়ার একধরনের সামাজিক বিধি নিষেধ ছিল। এখন অবশ্য একটি পদের বিপরিতে শতাদিক মেয়ে আবেদন করেন। ১৯৭৯ সালে মাঠ কর্মীদের হাতে একটি রেজিষ্ট্রার্ড খাতা দিয়ে দম্পতিদের নাম ঠিকানা লিখে লিখিত ভাবে এ কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৭৬ সাল থেকে প্রায় ’৮৫ সাল পর্যন্ত সময়ে এই বিভাগের পুরুষ-মহিলা অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন ভাবে লাঞ্চিত, নির্যাতিত, ও অপমানিত করা হয়েছে। কিন্তু কেউ চাকুরী ছেড়ে চলে যাননি। তাদের এই ত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম এ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এসব কর্মচারীরা উন্নয়ন খাত থেকে কেউ কেউ অবসর নিয়েছেন আবার কেউ কেউ মৃত্যু বরনও করেছেন। ১৯৯৮ সালে তৎকালিন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের স্ত্রী হিলারী ক্লিনটন বাংলাদেশ সফরে এসে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমের গতি প্রকৃতি দেখে অভিভূত হয়েছিলেন। বর্তমানে শিক্ষিত, চাকুরীজীবি ও প্রবাসী অনেক দম্পতিরা দুই সন্তানের অধিক সন্তান গ্রহনে আগ্রহী নন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের অধিদপ্তর আলাদা আলাদা থাকলেও মন্ত্রণালয়, মন্ত্রী বা সচিব দুই বিভাগের একজন হওয়ায় পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। কারন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাঠ পর্যায়ের সুবিধা অসুবিধার তথ্য অধিদপ্তর পর্যন্ত পৌঁছলে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছতে বাঁধা গ্রস্থ হয়। যে কোন সরকার ক্ষমতায় আসলে স্বাস্থ্য বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মন্ত্রী সচিবদের তাদের আয়ত্বে নিয়ে যান। ফলে কোনঠাসা হয়ে পড়ে থাকেন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তারা। দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে এমন অবস্থা চলে আসায় মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে চাঁপা ক্ষোভ ও দ্বিধা-দ্বন্ধ চলছে। দেশের উপজেলা পর্যায়ে যখন ‘‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা হাসপাতাল’’ নির্মান করা হয় তখন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার পদটি সৃষ্টি করা হয়। আশির দশক থেকে এই নামের পদটি চালু রয়েছে। কিন্তু ঐ পদের থাকা কর্মকর্তাগন পরিবার পরিকল্পনার কোন কাজ করছে না। তিনি হলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাই এই বিভাগের কাজ করছেন। কিন্তু এই নামটি বদল হচ্ছে না। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে নিজস্ব কোন অফিস, ভবন নেই। আসবাবপত্র সহ বিভিন্ন সমস্যায় কর্মচারীরা ভূগছেন। প্রায় ৪৫ হাজার কর্মচারী এনআইডি, ইপিআই, আর্সেনিক, ভিটামিন-এ ক্যাপসুল বিতরন, কৃমি ট্যাবলেট বিতরন, জিআর সহ স্বাস্থ্য বিভাগের শতকরা ৮০ ভাগ কাজ সরাসরি করলেও স্বাস্থ্য বিভাগের কোন কর্মচারী এক ভাগ কাজও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের করেন না। পর্যায়ে স্বাস্থ্য সহকারী, স্বাস্থ্য পরিদর্শক সহ বিভিন্ন পদে পদোন্নতির বিধান থাকলেও পরিবার কল্যান সহকারী, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, পরিবার কল্যান পরিদর্শিকাদের কোন পদোন্নতি নেই। অথচ তাদের কাজের বিনিময়ে রাষ্ট্র প্রধানরা আর্ন্তজাতিক পুরষ্কার লাভ করছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের সাথে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাঠ কর্মচারীদের বেতন বৈষ্ণম্য, ভ্রমন ভাতা, আর্থিক সুবিধাদি সহ বিভিন্ন বিষয়ে পার্থক্য রয়েছে। একজন স্বাস্থ্য সহকারী যে পরিমান বেতন পান তার চেয়ে অনেক কম বেতন পান পরিবার কল্যান সহকারী। অথচ স্বাস্থ্য বিভাগের মাঠ কর্মচারীদের চেয়ে তাদের কাজ বেশি। পরিবার পরিকল্পনা মাঠ কর্মচারীদের অভিযোগ তারা একজন দম্পতির নিকট পাঁচ বার গিয়ে যদি পদ্ধতি গ্রহন বা ব্যবহার না করাতে পারেন তাহলে ঐ কাজের দৃশ্যমান কোন মূল্যায়ন নেই। এসব কাজ জোর করে করার মত কোন বিধান বা সুযোগ নেই। কিন্তু স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মচারীরা মাইকে একটু খবর দিলেই লোকজন এসে সেবা গ্রহন করে থাকে। তাদের কার্যক্রম জনসমর্থনের পক্ষে আর পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচী এদেশের জনগনের একশত ভাগ সমর্থন এখনও পাওয়া যায় নি। কিন্তু তারপরও জবাবদিহি করতে হয়। এমনকি বেতন, টাইম স্কেল, ইনক্েিমন্ট সহ আর্থিক সুবিধাদি বন্ধ করে দেন কর্মকর্তারা। সরকার গ্রামীন জনগোষ্টির চিকিৎসা সেবার উন্নয়নের জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করে একজন করে কমিউনিটি হেলথ প্রোপাইডার নিয়োগ দিয়েছেন। তারপরও স্বাস্থ্য বিভাগের চাঁপে সপ্তাহে চার দিন পরিবার কল্যান সহকারীগন বাধ্যতামূলক ভাবে ক্লিনিকে ডিউটি করে থাকেন। ফলে তাদের বাড়ী বাড়ী দম্পতি পরিদর্শন এবং গ্রহনকারীর সংখ্যা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। মাঠের এই অবস্থাটি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে কোন মতেই জানানো হচ্ছে না বলে মনে হয়। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মচারীরা আলাদা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক শিক্ষকদের মত ১ম ও ২য় শ্রেনীর মার্যাদা, বেতন বৈষ্ণম্য সহ আর্থিক সুবিদাধী বৃদ্ধি এবং দ্রুত পদন্নোতির বিধি বিধান তৈরি করার জন্য সরকারের কাছে দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছেন।
গ্রামে এক শ্রেণীর লোক দীর্ঘদিন ধরে পরিবার পরিবকল্পনা কর্মসূচীকে ইসলাম বিরোধী কাজ বলে প্রচার ও প্রচারনা চালাচ্ছেন। তারা পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহন করলে জানাজার নামাজ পড়া না’জায়েজ বলেও প্রচার করছেন। বর্তমানে অবশ্য এই অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। অনেকেই মনে করেন মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশেই শুধুমাত্র পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম চালু রয়েছে। কিন্তু সরকারী বিভিন্ন তথ্যে দেখা যায়- ইরান, তিউনিশিয়া, মালয়েশিয়া, লিবিয়া, মরক্কো, তুরষ্ক, বাহরাইন, জর্ডান, আমেরিকা, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ব্রাজিল, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, নরওয়ে, ডেনমার্ক, হাঙ্গেরী, ভারত, দক্ষিন কুরিয়া, উত্তর কুরিয়া, জাপান, চীনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম চালু রয়েছে এবং ৫০ থেকে ৭০ ভাগ এসব দেশের দম্পতি পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতির আওতায় রয়েছেন।
সামগ্রিক ভাবে ‘‘রূপকল্প ২০২১’’ বিষয়ে সরকার যে দৃঢ় সংকল্প করেছেন তার বাস্তবায়নের জন্য অতিরিক্ত জনসংখ্যার লাগাম টেনে ধরে পৃথক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সফল ভাবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম করলে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশ নয়, এশিয়া মহাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে।
লেখক : কলামিষ্ট ও প্রবন্ধিক, বিশ্বনাথ, সিলেট।