AM-ACCOUNTANCY-SERVICES-BBB

বিশ্বনাথ প্রবাসী এডুকেশন ট্রাস্টকে বাঁচাতে ট্রাস্টিদের প্রতি মিছবাহ উদ্দিনের আহবান

বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: এপ্রিল - ৪ - ২০১৯ | ৯: ১০ অপরাহ্ণ

বিশ্বনাথনিউজ২৪ :: ঐতিহ্যবাহী বিশ্বনাথ প্রবাসী এডুকেশন ট্রাস্ট’কে ধংস করতে একটি মহল পায়তারা করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করে এই ট্রাস্টকে বাঁচাতে ট্রাস্টের সকল ট্রাস্টীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন সদ্য মেয়াদউত্তীর্ণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. মিছবাহ উদ্দিন। তিনি এক বিবৃতিতে এমন মন্তব্য করে বলেন- একটি মহল সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যে প্রনোদিত হয়ে ইদানিং বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়ায় আমাকে নিয়ে বিভ্রান্তমূলক তথ্য দিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করতে এবং নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থে ঐতিহ্যবাহী বিশ্বনাথ প্রবাসী এডুকেশন ট্রাস্টকে ধংস করতে কতিপয় ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সোসাল মিডিয়ায় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে তিনি বলেন- বিশ্বনাথ উপজেলাবাসীর প্রাণের সংগঠন বিশ্বনাথ প্রবাসী এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকে। এই ট্রাস্ট দীর্ঘদিন যাবৎ বিশ্বনাথের শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত আমি ট্রাস্টের ট্রেজারার পদে দায়িত্বপালন থাকাকালীন সময়ে বাংলাদেশে ট্রাস্টের ব্যাংক একাউন্ট সচল রাখতে গিয়ে আইনী জটিলতার কারণে সংগঠনের রেজিস্ট্রেশন করা হয়। ট্রাস্টের তৎতকালীন সভাপতি মির্জা আসহাব বেগ ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাংলাদেশে এসে সিনিয়র ট্রাস্টী আলহাজ্ব ফিরোজ খান (পংকি খান) সহ ৫জন সিনিয়র ট্রাস্টীকে সাথে নিয়ে আইনসম্মত ভাবে সংগঠনের রেজিষ্ট্রেশন কাজ সম্পন্ন করেন। তখন আমি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছিলাম। ট্রাস্টের সংবিধান অনুযায়ী সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও ট্রেজারারের মধ্যে যে কোন দুই জনের স্বাক্ষরে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের নিয়ম থাকায় রেজিষ্ট্রেশন কাজে যে অর্থ ব্যয় হয়েছে সেই টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করেন তৎকালীন সভাপতি মির্জা আসহাব বেগ ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম। তখন আমি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছিলাম। এই রেজিষ্ট্রেশন কাজ সম্পন্ন করা নিয়ে পরবর্তীতে ট্রাস্টীদের মধ্যে কিছুটা মতবিরোধ দেখা দিলে এমন পরিস্থিতি অবসানের লক্ষ্যে দ্বি-বার্ষিক সভায় ট্রাস্টের ট্রাস্টি প্রবীণ মুরব্বী আলহাজ্ব ফিরোজ খান (পংকি খান) কে প্রধান করে একটি মেডিয়েশন কমিটি গঠন করা হয়। এরপর ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ট্রাস্টের নির্বাচনে সম্মানিত সদস্যদের মূল্যবান ভোটে আমি সাধারণ সম্পাদক নির্র্বাচিত হই। নির্বাচনের কিছুদিন পর ট্রাস্ট্রের সংবিধান যুযোপযোগী করতে সংবিধানে কিছু ধারা সংযোজন করার উদ্যোগ গ্রহন করা হয়। এর প্রায় ৬মাস পর আমি সহ কার্যকরী কমিটির অধিকাংশ সদস্যকে না জানিয়ে সভাপতি মতছির খান উনার পক্ষের কার্যকরী পরিষদের কিছু সদস্যের যোগসাজসে অত্যান্ত গোপনীয়তার সাথে আমাদের ট্রাস্টকে যুক্তরাজ্যে কোম্পানী হিসেবে রেজিষ্ট্রেশন করতে সংগঠনের সংবিধান পরিবর্তন করে সম্পূর্ণ নতুন একটি সংবিধান তৈরী করেন। কিন্ত তাদের তৈরীকৃত নতুন সংবিধানটি ট্রাস্টের মূল লক্ষ্যের পরিপন্থি হওয়ায় আমি সহ কার্যকরী কমিটির ৫জন সদস্য তা মেনে নিতে রাজি হইনি। ফলে তারা আমাদের উপর বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। সংবিধান পরিবর্তনের এমন উদ্যোগ গ্রহন করায় ট্রাস্টের ট্রাস্টিদের মধ্যে তীব্র মতভেদের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে বিগত কমিটির মেয়াদকালে রেজিস্ট্রেশনের সময়ে অতিরিক্ত অর্থ খরছ করা হয়েছে এমন অভিযোগ এনে অর্থ ফেরত দাবী করে মেডিয়েশন কমিটির প্রধানকে না জানিয়ে সাবেক কমিটির কাছে সলিসিটার নোটিশ দেয়া হয়। এতে নতুন কার্যকরি কমিটি বিভক্ত হয়ে পড়ে। বিশেষ করে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমাকে না জানিয়ে নোটিশ প্রদান করায় আমি সহ কার্যকরী কমিটির ৫জন সদস্য (সহ-সভাপতি সাজ্জাদুর রহমান, সহ কোষাধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াদূদ শাহেল, কার্য নির্বাহী সদস্য ফারুক মিয়া ও মো. কবির মিয়া) কার্যকরি কমিটি থেকে ওয়াকআউট করি।
এর পরবর্তী সময়ে আমি পবিত্র হজ্জ পালনে মক্কায় চলে গেলে আমাকে না জানিয়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। এই পরিস্থিতিতে মেডিয়েশন টিমের প্রধান আলহাজ্ব পংকি খান যুক্তরাজ্য গেলে তাকে ট্রাস্টের সার্বিক বিষয় আমি অবহিত করি এবং ট্রাস্টের সকল ট্রাস্টীদেরকে সার্বিক বিষয় অবগত করতে আলহাজ্ব পংকি খানের পরামর্শে আমি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ২০১৮ সালের ১৪ অক্টোবর জরুরী সাধারণ সভা আহবান করি। এই সভা আহবান করায় আমাকে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে সাসপেন্ড করা হয়। যা আমাদের ট্রাস্টের সংবিধানের সম্পূর্ণ পরিপন্থি।
ট্রাস্টের সহ সভাপতি মোহাম্মদ সাজ্জাদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও আমার (সাধারণ সম্পাদক) পরিচালনায় অনুষ্ঠিত ওই জরুরী সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ট্রাস্টের বর্তমান সংকট নিরসনে একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহনসহ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। গ্রহনকৃত সিদ্ধান্তগুলির মধ্যে- ফিরোজ খান পংকি খানকে মেডিয়েশন কমিটির প্রধান হিসাবে অব্যাহতভাবে দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহীত হয় এবং বর্তমান সভাপতির সাম্প্রতিক ইসুকৃত মেডিয়েশন কমিটির বাতিল সংক্রান্ত পত্র সর্বসম্মতিক্রমে প্রত্যাখান করা হয়। সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব থেকে আমাকে বরখাস্ত সংক্রান্ত নোটিশ সংবিধানসম্মত নয় বিধায় তা প্রত্যাখ্যান করা হয় এবং ভবিষ্যতে বোর্ড অব ম্যানেজম্যান্টকে এই রকম সংবিধান বহির্ভূত সিদ্ধান্ত গ্রহন করা থেকে বিরত থাকার আহবান জানানো হয়। মেডিয়েশন কমিটি বাংলাদেশে আইনি অনুসন্ধানের পর, রেজিষ্ট্রেশন বাবদ ব্যয়কৃত নয় লক্ষ পঁচাশি হাজার টাকা ট্রাস্টের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট হওয়ায় এবং তা তৎকালীন বোর্ড অব মেনেজমেন্ট এটাকে অনুমোদন দেওয়ায় তা বৈধ খরছ হিসেবে ঘোষণ করা হয়। যদি রেজিষ্ট্রেশন বাবদ ব্যয়কৃত টাকা ফেরত প্রদানের দাবি উত্তাপন করা হয়, তাহলে অতীতের ক্যাপিটাল ফান্ড থেকে খরছকৃত সকল টাকা ফেরতযোগ্য বলে বিচারের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যদি কোন কারণে বর্তমান রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে হয় তবে সঠিক পন্থায় বিকল্প রেজিষ্ট্রেশনের মাধ্যমে ট্রাষ্ট ফান্ড নিরাপদ করে ট্রাষ্টিদের মতামতের ভিত্তিতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহবান জানানো হয়। ট্রাস্টের বর্তমান সংবিধান বিলুপ্ত করে নতুন সংবিধান করার উদ্যোগকে সভায় সর্বসম্মতিক্রমে প্রত্যাখ্যান ও প্রতিহত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং এ ধরণের প্রচেষ্ঠাকে সংবিধান পরিপন্থি হিসেবে গণ্য করা হয়। এছাড়া ট্রাস্টের বর্তমান উদ্ভুত জটিল পরিস্থিতি নিরসনে এবং বোর্ড অব ম্যানেজম্যান্টের বিভাজন দূরীকরণে মেডিয়েশন কমিটির প্রধানের উপস্থিতিতে সিনিয়র ট্রাস্টী হাজী সুনু মিয়া, হাজী রইছ আলী, আবুল কালাম আজাদ, আব্দুস শহিদ চৌধুরী, সামস্ উদ্দিন সামস্, গুলজার খাঁন, প্রফেসর নুরুল ইসলাম, এ কে এম ইয়াহ্ইয়া, মনির আহমদ, মোহাম্মদ আফছর মিয়া (ছোট মিয়া), আব্দুল কুছুছ, মনির আলী ও মতব্বির আলী (মহতব) কে সদস্য করে একটি অন্তবর্তীকালীন মেডিয়েশন কমিটি গঠন করা হয় এবং ট্রাস্টের স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনতে এই কমিটিকে সকলে সহযোগীতা করতে সভায় অনুরোধ জানানো হয়। যদি ট্রাস্টের বর্তমান জটিল সমস্যাগুলি আপোষ মিমাংশায় নিরসন না হয়, তাহলে উক্ত মেডিয়েশন কমিটি ট্রাস্টের আগামী নির্বাচন ও বিজিএম অনুষ্ঠান আয়োজনের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন ও এবং আপাদত ট্রাস্টের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
ট্রাস্টের সংকটাপন্ন অবস্থা থেকে রক্ষা করতে পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে সিনিয়র ট্রাষ্টী এ কে এম ইয়াহ্ইয়া ও প্রফেসর নুরুল ইসলামের আহবানে উভয় পক্ষকে নিয়ে পৃথক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বৈঠকে আহবানকারীদের পক্ষ হতে ৮টি প্রস্তাবনা পেশ করেন। তাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তাদের সকল প্রস্তাবনা মেনে নিতে আমরা কার্যকরী কমিটির ৫জন সদস্য সম্মতি জানাই। কিন্ত এই ৮টি প্রস্তাবনার অধিকাংশ মানতে রাজি হননি কমিটির সভাপতি মতছিন খানের নেতৃত্বাধীন সদস্যরা।
ট্রাস্টের এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকে রক্ষিত ট্রাস্টের টাকা সুরক্ষিত রাখতে মেডিয়েশন কমিটির পরামর্শে আমি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আপাদত লেনদেন বন্ধ রাখতে ব্যাংকে আবেদন করি এবং ট্রাস্টের কোন কার্যক্রম না থাকায় বাংলাদেশ কমিটির সভাপতি (উপজেলা নির্বাহী অফিসার)’কে অবহিত করে সাময়িকভাবে স্থানীয় অফিসের কার্যক্রম আমরা বন্ধ করি।
বিবৃতিতে মিছবাহ উদ্দিন বলেন- বর্তমান কার্যকরী কমিটির মেয়াদ ইতিমধ্যে শেষ হলেও ওই কমিটির সভাপতি মতছির খান সহ কমিটির কিছু সদস্যরা বেআইনীভাবে পদ পদবী ব্যবহার করছেন। যারা বিভ্রান্তমূলক তথ্য দিয়ে বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়ায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করছেন আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবো। সুনামধন্য এই ট্রাস্টকে বাঁচাতে ট্রাস্টের সকল সম্মানিত সদস‌্যবৃন্দকে এগিয়ে আসতে বিবৃতিতে আহবান জানান মো. মিছবাহ উদ্দিন।

আরো সংবাদ