AM-ACCOUNTANCY-SERVICES-BBB

সুসন্তান গঠনে পরিবারের গুরুত্ব অপরিসীম

বিশ্বনাথ নিউজ ২৪ ডট কম :: জুন - ৩০ - ২০১৪ | ৫: ১৫ অপরাহ্ণ

Pic0

মিজানুর রহমান মিজান : আমরা আজ হতাশার সমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছি প্রতিনিয়ত। ‘‘সর্বাঙ্গে ব্যথা, ঔষধ দেব কোথা” এ নীতি বাক্যটির প্রতিফলন সর্বস্তরে লক্ষণীয়। কিন্তু এ থেকে উত্তোরণ যত শীঘই্র সম্ভব , ততই মঙ্গলজনক। নতুবা আমরা কাঁদবো, আমরা ঠকবো  বাস্তবতার নিরিখে। এখানে কিঞ্চিত উদাহরণই হবে যথার্থ। যেমন বিগত ২৭ শে মে ২০১০ সালের দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত ‘‘রাজশাহীতে প্রশিক্ষণে আসা ৮৩ প্রধান শিক্ষকের ৫৬ জনই ভূয়া” এবং একই দিনের দৈনিক ইনকিলাবে ‘‘তথ্য গোপন ও প্রতারণা এক আইনজীবির সনদ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট, আরেকজনকে সতর্ক”, ১লা জুনের কালেরকণ্ঠে ‘‘শিক্ষকের বাড়িতে বসে ফাঁকা খাতায় লিখছিল এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা’’ ইত্যাদি সংবাদ এ সচেতন নাগরিক মাত্র উৎকণ্ঠিত, উদ্বেগাকুল সঙ্গত কারনে। প্রতারণায় সম্পৃক্ত শিক্ষকের নিকট থেকে কি শিক্ষণীয় তা বলা বাহুল্য। তাই বলে শিক্ষক সমাজ বা সকল শিক্ষক দায়ী নয়। শিক্ষক মানুষ গড়ার কারিগর। সমাজে সম্মানীয়, ভালবাসায় সিক্ত, মর্যাদা পূর্ণ আসনের অধিকারি শিক্ষবৃন্দ। তদুপরি শিক্ষা বিভাগেই যদি এমন তরো অবস্থা পরিলক্ষিত হয়, তবে যেই সেই ভাবা ছাড়া গত্যন্তর নেই।
মানুষের সর্বশেষ ভরসাস্থল বিচার। মানবাধিকার বা মৌলিক অধিকার, যে কোন অধিকার নির্ভর করে সমাজ সচেতন ও অপরের অধিকারের ক্ষেত্রে শ্রদ্ধাশীলতার গুরুত্বারুপের ক্ষেত্রে। সমাজের মৌলিক ও মানবিক মুল্যবোধের প্রতিফলন ঘটে বিচারালয়ে। বিচারাঙ্গনে আইনজীবিদের ভুমিকা কোন অংশেই খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। বরং বিচারকের পরেই আইনজীবির অবস্থান। ন্যায়-নীতি, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও মৌলিক অধিকার অর্জনের ক্ষেত্রে আইনজীবিদের সততা, দক্ষতা ও সক্রিয় ভুমিকা অপরিহার্য্য। এ থেকে বিন্দু মাত্র পদচ্যুতি সিন্ধু সমতর বিপর্যয়, ব্যর্থতা ডেকে আনে সমাজে, রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় মারাত্মক প্রতিবন্ধকতার পথকে করে প্রসারিত। সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার আইন। তা জনগণের মঙ্গলের জন্য, তাদের অধিকার প্রতিষ্টার বাহন স্বরূপ যথার্থ ভুমিকা পালনার্থে প্রত্যেক আইনজীবির সক্রিয়, সচেতন , দায়িত্বশীলতা , কর্তব্য নিষ্টা অবশ্যই প্রয়োজন। আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্টার জন্য মানবাধিকার ও মানবিক মুল্যবোধের ভিত্তিতে আত্মমর্যাদাশীল জাতি গঠন আমাদের উন্নয়নের পূর্ব শর্ত। আইনজীবিরা স্বাভাবিক ও সঙ্গত কারনেই সমাজের একেকজন নেতা। সুতরাং বৈরিতার পরিবর্তে সমঝোতার মাধ্যমে একাত্ম হয়ে মানুষের ভালবাসার জন্য , সহমর্মিতার জন্য কাজ করার আত্ম-প্রত্যয়ের আবেদন চিরকালীন সত্যের অংশ।
দেশ, জাতি, সমাজ যে হতাশ ও ব্যর্থতায় জর্জরিত। এর সমাধান কোথায় মিলবে ? সকলেই ছুটছি আলেয়ার পিছনে। এ দেশ , জাতি , সমাজকে ভালবাসতে হলে আমরা প্রত্যেককে ফিরে যেতে হবে তার নিজ নিজ স্থানে। অর্থ্যাৎ প্রত্যেকের পারবারিক অবস্থানের দিকে, ঘরের দিকে। পরিবারের সদস্যদের কাজকর্ম, আচার আচরণ, চলাফেরা তদারকী করার দায়িত্বটুকু যথাযথ পালন করা উচিত। এ দায়-দায়িত্ব এড়িয়ে চললেই সৃষ্টি হবে অনাকাংখিত জবিনের, চরিত্রের। পারিবারিক বন্ধনেই দায়িত্ব সচেতনতা শিক্ষণ, জীবন যাত্রার দিক নির্দেশক রুপে পরিগণিত। মার্ক টোয়েন এর ‘‘পরিবেশ মানুষকে যে শিক্ষা দেয়, পাঠ্য পুস্তক তা দিতে পারে না”। আবার নিকোলাস এর উক্তি ‘‘পরিবারই একটা মানুষের পরিচিতি” এখানে কর্তব্য। তাছাড়া ‘‘মায়ের কোল সন্তানের প্রথম পাঠশালা”। ইসলামের এ নীতি বাক্যটি স্মরণ ও অনুসরণে সুন্দর, সার্থকতার মুল মন্ত্র নিহিত। ভদ্রতার সহিত পরিমিত রসবোধ সম্পন্ন কথাবার্তায় সত্য , সুন্দর ও নৈতিকতার সম্বন্বয় সাধন মানব জীবনের এক বিরাট অংশ। অভ্যাসবোধ গড়ে তোলা অপরিহার্য্য। দায়িত্ব সচেতনতা , নৈতিকতা , মানবিক মুল্যবোধ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তাকে জীবন যাত্রার নিত্য সঙ্গি করার মন্ত্রে উজ্জিবিত করতে হবে সর্বাগ্রে। পরিবারস্থ সদস্যদের ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায়, পাপ-পূণ্যের পার্থক্য বুঝিয়ে দেয়ার মাধ্যমে ভবিষ্যত জীবনের সঠিক কান্ডারী রূপে গড়ে তোলতে হবে। এ ক্ষেত্রে মা-বাবার ভুমিকা অতীব জরুরী বলে পরিগণিত হবে, নিতে হবে। ‘‘শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড” বাক্যটি সকলের ধারণাবোধে জাগ্রত রাখা আবশ্যক। তবে কোন প্রকার শিক্ষার প্রয়োজন ? যে শিক্ষা মানুষকে ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় এর পার্থক্য নিুেপণের সহায়ক। যে শিক্ষা পরিবার তথা দেশ ও জাতীর অগ্রগতি ত্বরান্বিত করে।
আজকের শিশুরা আগামী দিনের জাতীর কর্ণধার। সুতরাং প্রত্যেকে সন্তানের দিকে লক্ষ্য রাখা আবশ্যকীয় মনে প্রাণে ধারণ, লালনের মাধ্যমে অগ্রসর হওয়া উাচত। সম্মান রক্ষা বা অহমিকার বদৌলতে অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রশয় দেয়া কোন মতেই শ্রেয় নয়। কল্যাণ বয়ে আনবে না। সন্তানের সফলতা নির্ভর করে মা বাবার উপর। সফলতায় আনন্দের অংশীদার প্রথমে মা বাবাই। এ পৃথিবীতে মা বাবার যত প্রকার পার্থিব দায় দায়িত্ব রয়েছে। তম্মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট দায়িত্ব , কাজ হচেছ সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলা। সন্তান শিক্ষিত হয়ে যে সকল ভাল কাজ করে, তার সফলতা মা বাবাসহ সমাজের সর্বন্তরের মানুষ ভোগ করে, আনন্দ লাভ এবং হয় গর্বিত। মানবিক গুণাবলীর বিকাশ ও সমাজ সংসারের মঙ্গলের জন্য নিবেদিত সন্তানই সর্বোচ্ছ মর্যাদার অধিকারী ও প্রশংসিত। তাই আদর্শ ও সুশিক্ষিত সন্তান গঠনের উপযুক্ত পরিবেশ স্থান হচ্ছে পরিবার। পরিবার থেকে উৎপাদিত সুনাগরিক দেশ, জাতী, পরিবার তথা সকল ক্ষেত্রেই মঙ্গলজনক। সুতরাং প্রত্যেক মা বাবার একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য হচেছ তাদের সন্তানদের আদর্শিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা ভবিষ্যত কল্যাণের জন্য, শান্তির সুবাতাস বহমানের জন্য, সুন্দরের জন্য। আমরাতো এমনটাই চাই। আমাদের দেশ , সমাজ , পরিবার আরো সুন্দর হোক , ভালবাসার সবুজে ভরে তোলতে চাই। দুঃখ, কষ্ট, বেদনা, প্রতারণার অবসানে ফুলের সুবাসে উদ্ভাসিত হোক প্রতিটি ভোর, প্রতিটি পরিবার।

আরো সংবাদ